Md Selim: মুর্শিদাবাদ আসনে ‘বহিরাগত’ CPI(M)?

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ হারানো জমি উদ্ধার করতে মুর্শিদাবাদে CPI(M)কে ‘বহিরাগত’-এর হাত ধরতে হচ্ছে? অন্তত জেলার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে খবর এমনটাই। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহ সেলিম, দাবি সূত্রের।

এই আসন থেকেই গতভোটে লড়াই করেছিলেন সিপিআইএমের বদরুদ্দোজা খান। সেই নির্বাচনে তিনি তৃণমূলের আবু তাহের খানের কাছে পরাজিত হন। সংবাদ হাজারদুয়ারিকে এদিন তিনি স্পষ্ট বলেন “এবার আমি ভোটে দাঁড়াচ্ছি না।” তাহলে তার জায়গায় সিপিআইএম কাকে প্রার্থী করবে? বদরুদ্দোজা বলেন “কে লড়াই করবে? আর কে লড়াই করবে না তা রাজ্য থেকেই জানানো হবে।”

গত একুশের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকালে দেখা গেছে এই মুর্শিদাবাদ আসনে লোকসভা আসনের বিধানসভাগুলোতে সিপিআইএম জোট প্রার্থী হিসেবে রাণীনগর, জলঙ্গি, মুর্শিদাবাদ এবং করিমপুরে প্রার্থী দিয়েছিল। রানীনগর ও মুর্শিদাবাদের যুবদের উপরে ভরসা করেছিল দল।

মহ: সেলিম দাঁড়াবেন কি দাঁড়াবেন না প্রশ্নে বদ্রুদ্দোজা বলেন “এটা মিডিয়া হাইপ।” যুক্তি হিসেবে তিনি উদাহরণ টানেন। বলেন “এর আগে রাজ্যসভা থেকে সীতারাম ইয়ে চুরির নাম সংবাদমাধ্যমে ভেসে উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলের ছাড়পত্র মেলেনি। এক্ষেত্রেও মহ: সেলিমকেও ভোটে দাঁড়াতে গেলে পার্টির ছাড়পত্র প্রয়োজন।”

মুর্শিদাবাদ আসন রাজ্যের অন্য অনেক জায়গার মতো বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। সেক্ষেত্রে স্থানীয় নেতৃত্বের ওপরেই দল ভরসা রাখত। গত লোকসভা আসনে এই আসন থেকে জিতে সংসদ হয়েছিলেন তৃণমূলের আবু তাহের খান। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হলেও তাহেরের আসল বাড়ি নওদায়। গত পাঁচ বছরে তিনি এই এলাকায় কত রাত্রি কাটিয়েছেন মানুষের জন্য তা খুঁজেও বলতে পারছেন না স্থানীয় মানুষজন।

সিপিআইএমের ক্ষেত্রেও এবার তাহলে জুটতে চলেছে বহিরাগত তকমা, প্রাক্তন শিক্ষক বদরুদ্দোজা বলেন, ” একজন সংসদকে বছরের অধিকাংশ সময় লোকসভায় কাটাতে হয়। তাঁর হয়ে দল স্থানীয় এলাকায় কাজ করে। সুতরাং স্থানীয় হোক বহিরাগত, যিনি প্রার্থী হবেন তিনি মানুষের কথা লোকসভায় তুলে ধরবেন। তবে স্থানীয় মানুষকে সংসদ হিসেবে পেলে মানুষজনের বাড়তি একটু সুবিধা হয় তো হয় বটেই।”

মুর্শিদাবাদ লোকসভা আসনের মধ্যে সাতটি বিধানসভা। মুর্শিদাবাদ বাদ দিয়ে বাকি ছ’টি বিধানসভাতে একুশের ভোটে জিতেছে তৃণমূল। এই ছটি বিধানসভার মধ্যে ভগবানগোলায় প্রার্থী হয়েছিলেন হুগলির বাসিন্দা ইদ্রিস আলী। দলের মধ্যে তো বটেই ভোটে জেতার পর স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ প্রয়াত বিধায়ককে ডাকলেও পাওয়া যেত না। এই আসনেই ইদ্রিসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন সিপিআইএমের জনপ্রিয় মুখ কামাল হোসেন। ভোটের প্রচারে সেই কামাল হোসেনও ইদ্রিস আলীকে বহিরাগত বলে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। এদিনও কামাল বলেন, “প্রয়াত বিধায়কের শারীরিক অসুস্থতা ও অন্যান্য কারণে স্থানীয় মানুষজন বিধায়ককে কাছেই পাননি। একইভাবে এলাকার সাংসদদেরও মানুষ সুখে দুঃখে কাছে পায়নি।” তাহলে সাংসদ পদে সেলিম দাঁড়ালে তার ক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন উঠবে তো? কামাল বলেন “কোথায় সেলিম আর কোথায় ইদ্রিস?”

একুশের ভোটে জিতে মুর্শিদাবাদের বিধায়ক হয়েছিলেন বিজেপির গৌরীশংকর ঘোষ। পদ্ম প্রতীকে এবার তিনি সংসদ পদে লড়াই করছেন মুর্শিদাবাদ আসন থেকে। তিনি বলেন “প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তাকে কথায়-কথায় বহিরাগত তকমা দিতে ছাড়েন না সিপিআইএম কংগ্রেস তৃণমূলরা তাহলে আমার প্রশ্ন রাজ্যের বাসিন্দা হলেও মুর্শিদাবাদের সেলিম প্রার্থী হলে কি বহিরাগত নন?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights