
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ফের মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে ফাঁপরে কৃষ্ণনগর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। এবার বিধায়করা তাঁর বিরুদ্ধে একজোট হয়ে চিঠি দিলেন দলের রাজ্য কমিটির সভাপতি সুব্রত বক্সিকে। জেলা সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরানোর দাবি তোলা হয়েছে লিখিতভাবে। নাকাশিপাড়ার কল্লোল খাঁ, কালিগঞ্জের নাসিরুদ্দিন আহমেদ, চাপড়ার রুকবানুর রহমান, করিমপুরের বিমলেন্দু সিংহ রায়, পলাশিপাড়ার মানিক ভট্টাচার্য এবং কৃষ্ণনগরের উজ্জ্বল বিশ্বাসরা অভিযোগ করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
এলাকার বিধায়কদের অন্ধকারে রেখে নিজের মতো সংগঠন চালানো, আলোচনা না করে বুথ ও অঞ্চল স্তরে দায়িত্ব বদলের মতো সিদ্ধান্তও একা নিয়েছেন মহুয়া, আর তা নিয়ে কর্মীদের কাছে জবাবদিহি করতে গিয়ে মান খোয়াচ্ছেন বিধায়করা। এদিন নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, ” নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একপ্রকার জেহাদ ঘোষণা করে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম মহুয়া মৈত্রকে লোকসভায় জিতিয়ে আনতে। সেদিন মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম তাঁদের পাশে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন। আজ সেই মানুষকে পাল্টা জবাব দিতে হচ্ছে সাংসদ নিজের মতো করে দল চালানোয়। আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। সুব্রত বক্সিকে চিঠি দিয়ে আমরা সে কথাই জানিয়েছি।”
বছর খানেক আগে ২০২৩-এর এই শীতে এথিক্স কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল। অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নের মতো গুরুতর অভিযোগ জমা পড়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও ষড়যন্ত্র করে বাগ্মী মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে সেই সময় অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতানেত্রী। কৃষ্ণনগরে সভা করতে এসে সেই সময় অসুস্থ কল্লোল খাঁকে জেলা সভাপতি থেকে সরিয়ে মহুয়াকে সেই পদে বসিয়েছিলেন মমতা। বছর ঘুরতে না ঘুরতে তাঁর বিরুদ্ধেই দল পরিচালনায় অসহযোগিতার অভিযোগ নিয়ে সরগরম কৃষ্ণনগর।
সামনেই রাজ্য জুড়ে দলে ও প্রশাসনে রদবদলের কথা আছে। তার আগে মহুয়ার সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝিয়ে ফের তাঁকেই দায়িত্বে রাখবেন না কি তাঁর পরিবর্তে কোনও নতুন মুখ নিয়ে আসবেন তা নিয়ে অবশ্য নানান গল্প ও গুজোব ছড়াচ্ছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। পনের ষোল মাস বাদেই বিধানসভা নির্বাচন। সেক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন বলেও মনে করছেন দলের পুরনো নেতাদের একাংশ। করিমপুর মুর্শিদাবাদ সাংসদ আবু তাহের খানের এলাকার মধ্যেই পরে। করিমপুরে দলের সংগঠনে তাঁর মতের গুরুত্ব দেয় দল। মহুয়া প্রসঙ্গে অবশ্য তাহের নিরাপদ দূরত্বই রেখেছেন। তিনি বলেন, ” রাজ্য নেতৃত্বের ব্যাপার এখানে আমার বলার কী আছে?”