
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ক্লান্তির ঘুম যে এমন বিপত্তি ডেকে আনবে কে জানত? অথচ মুর্শিদাবাদের পাঁচজন পরিযায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে এই কান্ডটাই ঘটেছে। সূত্রের দাবি, উত্তরপ্রদেশের মথুরার গোবিন্দ নগর থানা এলাকায় কাজ করতে গিয়েছিল ওরা। শুক্রবার রাতে সেখানে কাজ করতে গিয়ে রাত্রি নেমে আসার কারণে স্থানীয় একটি পার্কে ঘুমিয়ে পরে ভোরের আলো ফোটার খানিক আগে।
স্থানীয় পুলিশ সকালে পেট্রলিং ডিউটিতে বেড়িয়ে তাদের দেখতে পায়। একটি পার্কে পাঁচজন মুসলমান যুবককে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে তাদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানায় নিয়ে এসে আটকে রাখা হয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া পাঁচ যুবকের মধ্যে তিনজন মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার আর দু’জন ইসলামপুর থানার বাসিন্দা। তাঁরা ফোনে বাড়ির লোকজনকে সেই খবর জানালে ইসলামপুর থানা এলাকার দুই পরিযায়ী শ্রমিক নূর ইসলাম ও সাইদুল ইসলামের বাড়ির লোক স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করে পুলিশকে বিষয়টি জানায়।
ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক নির্মল দাস, তাঁর শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে উত্তরপ্রদেশ থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ধৃতদের পরিচয় পত্র পাঠানো হলে তা যাচাই করে দেখে ওই পাঁচজনকে মুক্তি দেয় থানা। ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত ওই আধিকারিক বলেন, “ উত্তরপ্রদেশের পুলিশের ধৃতদের নাম জেনে বাংলাদেশি বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয়েছিল বলেই আটক করেছিল। পরে সব তথ্য পেয়ে ওদের ছেড়ে দিলে ওরা যে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করছিল সেখানেই ফিরে গিয়েছে।”
বাংলাদেশ ঘেঁষা মুর্শিদাবাদের একটা বড় অংশের মানুষ রোজগারের জন্য ভিন রাজ্যে এমনকি ভিন দেশেও চলে যায় ভিটেমাটি ছেড়ে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীর সন্ধান মিলেছে জেলায়। সংশোধীত ওয়াকফ আইনকে কেন্দ্র করে হিংসার ঘটনায় ঘটনাতেও উত্তেজিত হয়েছে জেলা। সেই ঘটনা থেকেই ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া মুর্শিদাবাদের সাধারণ নিরীহ নাগরিকদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ অভিজ্ঞ মহলের। সাম্প্রতিক অতীতে উড়িষ্যা, গুজরাতেও একই ঘটনা ঘটেছে। শাসক বিরোধী সবপক্ষই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে হেনস্থা বন্ধের অনুরোধ করেছেন। সেই তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী থেকে অধীর চৌধুরী সকলেই আছেন।