Nirapada Sardar: সন্দেশখালি মডেল হয়ে উঠুক সারা রাজ্যে

Social Share

সংবাদ প্রতিনিধি, কলকাতাঃ সন্দেশখালিতে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ সেখানকার প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের নিরাপদ সর্দারকে গ্রেপ্তার করেছিল চলতি মাসের ১১ তারিখ। ১৭ দিন জেলবন্দি থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে হাজিরা দেওয়ার শর্তে তাঁকে জামিন দেন। আজ বুধবার দলীয় কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফের রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের পাশাপাশি দুই শাসক দলেরও সমালোচনা করেন সারা ভারত খেত মজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক নিরাপদ।

সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজানকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের কোনও বাধা নেই বলে কলকাতা হাইকোর্ট যেদিন আদালতের অবস্থান পরিস্কার করে সেদিনই তৃণমূলের উঁচু তলার নেতারা দাবি করেছিলেন সাত দিনের মধ্যে শাহাজাহান গ্রেপ্তার হবে। সেই প্রসঙ্গে নিরাপদ দাবি করেন, পুলিশকে তিনি শাহজাহানের গতিবিধি জানানো সত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। তাঁর আরও দাবি, ” শাহাজানকে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না চাইলে আগামী পঞ্চাশ দিনেও শাহজাহান গ্রেপ্তার হবে না”

তবে সন্দেশখালির মানুষজন শাহজাহানের পলাতক হওয়ার সুযোগে যেভাবে মুখ খুলেছে তা সারা রাজ্যের কাছে একটা মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও মনে করেন এই বাম নেতা। তিনি বলেন, ” শাহজাহান পলাতক বলেই ওখানকার মানুষ মুখ খুলতে পেরেছে। সন্দেশখালির মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে।” তাঁর দাবি, ” আজ ওরা ঠেলায় পরে জমি ফেরত দিচ্ছে। ২০১৩-১৪ সালে বিধানসভায় যে কথা বলেছিলাম সেটা যে ঠিক তা ওদের জমি ফেরতের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হচ্ছে।” বাম আমলে গোটা দেশের সামনে সন্দেশখালিতে এমন ঘটনা ঘটেনি, সেখানকার মহিলাদেরকে ঝাঁটা হাতে দাঁড়াতে হয় নি, কোনওদিন তাঁদের নির্যাতনের কথা বলতে কেউ শোনেনি বলেও তিনি দাবি করেন।

তবে সন্দেশখালি কান্ডকে নিজেদের পক্ষে টানতে যে সিপিএম পিছিয়ে নেই তা এদিন ঘুরিয়ে স্বীকার করেছেন নিরাপদ। সরাসরি দাবি করেছেন সেখানকার মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বিজেপি পক্ষে টানতে চাইছে। তিনি বলেন, ” রাজনৈতিকগতভাবে নিজেদের মতো করার স্বার্থে বিজেপি ওখানকার মানুষের ঐক্যবদ্ধতাকে ভাঙতে চাইছে। জয় শ্রী রাম শ্লোগান দিয়ে মানুষকে টেনে নিয়ে যেতে চাইছে। ওই শ্লোগানের মধ্যই তৃণমূল ও বিজেপির গোপন আঁতাত আছে। এলাকার মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দূর্বল করার চক্রান্ত ওটা। মানুষ সেটা বুঝতে পেরেছে।”

কিন্তু এলাকাবাসী ওদের দাবি না শুনে নিজেদের মতো করে একত্রিত হয়ে আন্দোলন করেছে। তাদের পাশে তাঁর দল আছে জানিয়ে নিরাপদ বলেন, ” আমরা বলেছি সিপিএম করতে হবে না। কিন্তু ৭৭-৭৮ সালের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই সময় এইরকম অত্যাচার ছিল না। নিজের মতো করে বাঁচতে শিখেছিল মানুষ। ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল। আজ সব হারিয়ে গিয়েছে। তাই সব ফেরানোর দাবিতে এখানে আন্দোলন হচ্ছে। সমস্ত চক্র ভেঙে যাচ্ছে সন্দেশখালির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কাছে। আমরা চাই সারা রাজ্য জুড়ে এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠুক। সন্দেশখালি মডেল করার চেষ্টা করছে। গোটা রাজ্যে এই আন্দোলন গড়ে উঠুক।”

শুধু তাই নয়, নিরাপদ ওই সাংবাদিক সম্মেলনে আরও দাবি করেন, “সন্দেশখালির মতো অনেক গ্রাম আছে, অনেক মহল্লা আছে যেখানে অনুব্রত শাহাজানদের মতো লোক আছে। সেখানে অত্যাচার হবে না, জমি লুট হবে না, পাট্টা জমি লুট হবে না, বর্গাদার উচ্ছেদ হবে না, নারী নির্যাতন হবে না, মহিলারা সম্মান পাবে এ প্রত্যাশা পশ্চিমবাংলার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ করবেন না। শাহজাহানের মতো অসংখ্য লোক গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে আছে। সন্দেশখালি তার একটা প্রকৃষ্ট উদাহরণ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights