নওদায় নাবালিকা মৃত্যুতে কি আরজিকরের ছায়া ?

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সোমবার রাতে সহজ স্বাভাবিকভাবে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যে মেয়ে কথা বলেছে মঙ্গলবার সেই মেয়েরই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের লোকজন মেয়ের দেহ দেখতে পাননি। ততক্ষণে নিথর দেহের ঠাঁই মিলেছে ঠান্ডা ঘরে। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের নওদায়। একটি বেসরকারি আবাসিক স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী গলায় ওড়না জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত ওই নাবালিকার নাম সোহানা মন্ডল (১৪)। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই আবাসিক স্কুলে ৪১৪ জন পড়ুয়া আছে, সোহানা যে ঘরে থাকত সেখানে ১২ জন মেয়ে ছিল।

মঙ্গলবার সকালে অন্য মেয়েরা স্নানের জন্য বাইরে গেলেও সোহানা ঘরেই ছিল। তার সহপাঠীরা ফিরে এসে সোহানাকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় হস্টেল কতৃপক্ষকে। স্কুল কতৃপক্ষের দাবি, অচৈতন্য সোহানাকে প্রথমে আমতলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হলে চিকিৎসা চলাকালীন সেখানেই সোহানার মৃত্যু হয়।

আবাসিক স্কুল কতৃপক্ষের এই দাবি কিছুতেই মানতে পারছেন না মেয়েটির পরিবারের লোকজন। তাঁরা পাল্টা স্কুল কতৃপক্ষের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছেন। মৃতের পরিবারের দাবি, তাঁরা মেয়েকে হাসপাতালে নয়, মর্গে দেখতে পান। তাঁদের প্রশ্ন, এত তাড়াতাড়ি কী করে দেহ মর্গে পাঠান হল? সোহানার এক আত্মীয়ের দাবি, ” মঙ্গলবার সকালে প্রথমে জানানো হয় সোহানা অসুস্থ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। খানিকক্ষণ পরে বলা হয় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমরা এসে শুনছি দেহ মর্গে রয়েছে? তাহলে কখন কী ঘটেছে তা আমাদের কাছে পরিষ্কার করে জানাচ্ছে না স্কুল কতৃপক্ষ।”

মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্কুল কতৃপক্ষও। তবে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে যা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য রেজাউল মল্লিক। তিনি বলেন, ” আমাদের কাছেও বিষয়টি স্পষ্ট নয়। বন্ধুদের সঙ্গে কোনও ঝামেলার জন্য এই ঘটনা ঘটেছে কি না তা বলতে পারছি না।”

যদিও মৃতের পরিবার ওই স্কুলের প্রবেশ পথে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। শিক্ষকদের মারধর করা হয় বলে দাবি স্থানীয় সূত্রের। খবর পেয়ে ছুটে আসে নওদা থানার পুলিশ। পুলিশের সঙ্গেও ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। তাদের দাবি, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নয়, স্কুল কতৃপক্ষ ঘটনার অন্তত দু-ঘন্টা পরে পরিবারকে খবর দেয়। এমনকি মৃতদেহও তাঁরা দেখতে পারেন নি বলে দাবি। সত্য ঘটনা স্কুল কতৃপক্ষ আড়াল করছে বলে দাবি তাঁদের।

স্বাভাবিকভাবেই এক নাবালিকা পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যুতে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে জেলায়। এক্ষেত্রেও অনেকে আরজি র কাণ্ডের সঙ্গে তুলনা টানছেন। স্কুল কতৃপক্ষের গাফিলতিকেও দায়ি করছেন অনেকে। পুলিশ অবশ্য অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights