বিদ্যুৎ মৈত্র, সাগরদিঘিঃ উপ-নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়িয়ে রাজ্যবাসীর কাছে মডেল হয়ে উঠেছিল সাগরদিঘি বিধানসভা। অথচ নির্বাচনে জিতে পাল্টি খেয়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন বিড়ি মালিক বাইরন বিশ্বাস। বর্তমানে যিনি নিজেই ব্যাঙ্গার্থে ‘সাগরদিঘি মডেল’ হিসেবে রাজ্য রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। সেই সাগরদিঘির মানুষ এবার সুযোগের সদ্ব্যবহার করবেন বলে স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের বিশ্বাস।
জঙ্গিপুর লোকসভা আসনের বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী মর্তুজা হোসেন ওরফে বকুল। প্রয়াত মন্ত্রী আবদুস সাত্তারের ভাই সিরাজুল ইসলামের এই নাতি স্বভাবে মৃদুভাষী হলেও জেলা রাজনীতির অলিন্দে পরিচিত মুখ। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাত্তার পরিবারের আর এক দূরাত্মীয় তৃণমূলের খলিলুর রহমানই শুধু নন। নির্দল প্রার্থী আসাদুল শেখ, বাইরনের নিকটাত্মীয়ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। এছাড়াও এই কেন্দ্রে নাম লিখিয়েছেন আর এক সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের দাদা বিড়ি মালিক শাজাহান বিশ্বাস। তিনি আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকির বাজি।
আরও পড়ুনঃ ডোমকলের জনস্রোত কথা বলবে ইভিএমে?
যদিও বিড়ি মহল্লায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে মহল্লার কতৃত্ব কার হাতে থাকবে তাই নিয়ে চলছে জোর রেষারেষি। তারই ফল নানা দলের প্রতীক নিয়ে বিড়ি মালিকদের ক্ষমতা দখলের জন্য ছুটোছুটি। যদিও তাত্বিকদের মতে, বিশ-পঁচিশ বছর ধরে পুঁজিপতিদের নির্বাচনে লড়াই খানিকটা অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতবর্ষের রাজনীতির বাঁক বদলের সঙ্গে সঙ্গে। এখন তা প্রকট হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সেই পুঁজিপতি মালিকদের ভোট প্রচারের কথা-বার্তায় বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে টুঁ-শব্দটি নেই। আর এখানেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, মালিকদের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফসল ঘরে তুলতে পারেন বকুল।
রবিবার সাগরদিঘিতে দলীয় কার্যালয়ে কর্মী সম্মেলনে হাজির ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায়। ২৫০টি বুথের কর্মীদের নিয়ে হওয়া সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের সাগরদিঘির পর্যবেক্ষক জাহাঙ্গীর ফকির। উপস্থিত ছিলেন দলের জঙ্গীপুর লোকসভার পর্যবেক্ষক রবিউল ইসলাম সহ অন্যরা। বৈঠক থেকে বেড়িয়ে বিধায়কের নাম না করে সৌম্য আইচ বলেন, “কেউ চোরের দলে ভিড়তেই পারে। তা বলে সাগরদিঘির মানুষ কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়েন নি। বেইমানির জবাব এবার তাঁরা ব্যলট বক্সে দিতে মুখিয়ে আছেন। কর্মীরা এই নির্বাচনেই উচিৎ শিক্ষা দেবে।”
যদিও শিক্ষক তথা লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলী কংগ্রেসের এই দাবিকে দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছু বলছেন না। তাঁর পরিস্কার জবাব, “মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি আসনের তিনটিতেই তৃণমূল জিতবে। বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদে হাড্ডাহাড্ডী লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে দলের প্রার্থীরা জিতলেও খলিলুর রহমান জিতবেন নিরঙ্কুশ ভোটে।”