বিপ্লব মুখার্জী, কলকাতাঃ আজ সোমবার শীর্ষ আদালতে শুনানি রয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিরত শিক্ষকের চাকরি ‘বাতিল’ হয়ে গিয়েছে দিন সাতেক আগে। সেই চাল থেকে কাঁকড় বাছাইয়ের পথ খুঁজতেই আজ শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য।
এদিকে সেই ফয়সলা যাই হোক না কেন পড়ুয়া মহলে অবশ্য দিন সাতেক ধরে শিক্ষক শব্দে বেশ সন্দেহ তৈরি হয়েছে। দিন দুয়েক পরেই চলতি বছর মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হবে। পড়ুয়া মহলের দাবি, সেই পরীক্ষার খাতা নিশ্চিত দেখেছেন বাতিল হওয়া শিক্ষকরা। সেক্ষেত্রে তাঁরা কোন প্রশ্নের কোন উত্তরে কেমন নম্বর দিয়েছেন, আদৌ সঠিক নম্বর দিয়েছেন কি না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুনঃঅধীরকে ভরসা দিলেন ক্যাপ্টেন মীনাক্ষী
একইসঙ্গে একাদশ শ্রেণিতে অনেক পড়ুয়াই এলাকায় পরিচিত শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়বার পরিকল্পনা করে। কুচবিহার থেকে কাকদ্বীপ প্রায় সব এলাকাতেই বাতিল হওয়া শিক্ষকদের পড়ানোর সুনাম রয়েছে। তাঁরা ইতিমধ্যে পড়ানোও শুরু করেছেন। কিন্তু বেলঘরিয়ার সুমনা চৌধুরী, অঙ্কিতা পাল, তুষার চক্রবর্তীদের দাবি, ” যে স্যারের কাছে পদার্থ বিদ্যা পড়তে যাই সেই স্যারের নাম শুনলাম বাতিলের তালিকায় আছে। স্যার ভাল পড়াচ্ছেন কিন্তু চাকরি চলে যাওয়ায় সন্দেহ তো হচ্ছেই। মনে হচ্ছে স্যারও!”
আবার সোদপুরের সুকান্ত রায়ের মেয়ে ইংরেজী পড়বার জন্য স্থানীয় স্কুলের এক শিক্ষিকাকে বেছেছিলেন। সুকান্ত বাবু এদিন বললেন। ” ওই ম্যাডাম যে ঘুষ দিয়ে তালিকায় নাম তোলান নি তা আমি কী করে নিশ্চিত হব?” পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন অনিমেশ দত্ত। তাঁর ছেলে এবছর উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছে। কিন্তু যেখানে ছেলে রসায়নের টিউশন পড়তে যেত সেই শিক্ষকের নামও রয়েছে বাতিলের তালিকায়। অনিমেশ বাবু অবশ্য শিক্ষক বদল করছেন না। তিনি বললেন, ” ছেলে ওই শিক্ষকের কাছে পড়েই ভাল ফল করেছে এর আগে। ছেলের পড়তেও ভাল লাগে। খামোকা ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে ছেলেকে টিউশন ছাড়ানোর কোনও মানে হয় না।”
আজ যদি আদালতে সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে আগামী দিনে শিক্ষক সমাজের ওপর যে ভয়ংকর অবিশ্বাস জন্মাবে সাধারণ মানুষের তা এই ঘটনার পর নিশ্চিত বলা যায় দাবি প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নিরুপম চট্টোপাধ্যায়ের।