
বিদ্যুৎ মৈত্রঃ উপচে পড়া ভিড় নয়, লক্ষ্মী বারে তৃণমূলের ডাকা সভায় নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়াম ছিল কাণায় কাণায় পূর্ণ। গ্রাম থেকে, শহর থেকে নেতারা গিয়েছেন মহানগরে। বিরোধীদের সঙ্গে নয়, দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার গোষ্ঠীর সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করে ক্লান্ত সেই গ্রামবাংলার কর্মীরা গিয়েছিলেন “দিদির বকুনি শুনতে।” তাঁরা বলছেন, “দিদি, সব নজর রাখেন, বুঝলেন তো। কিন্তু দিদিরও অনেক সময় কিছু করার থাকে না।” তবে দলনেত্রীর মুখে রদবদলের বার্তায় হাসি ফিরল মুর্শিদাবাদের একাংশ কর্মীর মুখে।
বৃহস্পতিবার মমতা ও অভিষেক দলের একনিষ্ঠ কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। সেই বার্তা তাঁদের শুনতে ভাল লাগলেও দাবি, ” বাস্তব বড় কঠিন।” তাঁরা আরও বলছেন, “দিদি সবসময় বুথ কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। এবারও বলেছেন। কিন্তু নেতারা পাত্তা দেন না ভোটে জিতে গেলে।”
নেতাজি ইন্ডোর ফেরত দৌলতাবাদের এক কর্মী বলেন, ” নামি-দামি চার চাকা আর সঙ্গে গুটিকতক প্রহরী নিয়ে বুথে ঘুরে নেতা হওয়া যায়। কিন্তু নির্বাচনে দলকে জিতিয়ে আনতে বুথ কর্মীদের যে কোনও বিকল্প নেই, তা বিলক্ষণ বোঝে যে কোনও রাজনৈতিক দল। অথচ বাস্তবে নির্বাচনে জিতে যে মানুষটি রাতারাতি নেতা হয়ে যান পরের দিন তিনি সেই বুথ কর্মীর কথাই ভুলে যান। শুধু তৃণমূল দলেই যে এই ‘রোগ’ আছে বিষয়টি তেমন নয়। বঙ্গে ক্ষমতাসীন ৩৪ বছরের বামফ্রন্টের মধ্যেও এই রোগ ছিল। এখনও এই ‘রোগ’-এ তাঁরা যে আক্রান্ত তা মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে চলে আসে শেকল ভেঙে।”
সেই বুথ কর্মীদের দায়িত্ব দিয়েছেন ভোটের তালিকা সংশোধনের জন্য। মমতা বলেছেন, ” ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজটা বুথের কর্মীদের করতে হবে। জেলা সভাপতিরা দায়িত্ব নিয়ে তাদের নামান। নির্বাচন ছাড়া যাদের ডাকেন না এটা তাঁদের অপদার্থতা। সারাবছর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়।” দশদিনের মধ্যে জেলা সভাপতিদের সেই কাজ শেষ করতেও নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। বিজেপি যে কারচুপি করে ভোটার তালিকায় জল মেশাচ্ছে সে ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ” ক্ষেত্র সমীক্ষা করে দেখতে হবে। অনলাইনে নাম থাকলেই চলবে না। শারিরীকভাবে সে বাংলায় উপস্থিত আছে কি না তা মাথায় রাখতে হবে।”