
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এক এপিক নম্বরে দুই ভিন রাজ্যের ভোটার কেন? তাই নিয়ে দেশজুড়ে হইচই পড়েছে। ছুটির দিন হলেও ভারতের নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাদের সাফাই দিয়েছে রবিবার। সেখানে লেখা হয়েছে নির্বাচন কমিশন ইআরএমএস সিস্টেম (ERM System) থেকে ইরোনেট সিস্টেমে (ERONET) ভোটার তালিকা স্থানান্তরের কাজ করেছে। সেই কাজ করতে গিয়ে এই ভুল হয়েছে। তবে দিল্লির অফিস থেকে অনুজ চন্দক সাক্ষরিত সেই বিজ্ঞপ্তিতে এটাও জানান হয়েছে, এপিক নম্বর এক হলেও নির্বাচন এলাকা, ভোট কেন্দ্র সব আলাদা। তবু এই ধরনের ভুল নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে তা সংশোধন করে প্রত্যেক নির্বাচকের জন্য অভিন্ন এপিক নম্বর চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে।
এক এপিক নাম্বারের ভোটার দু’জন। একজনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের রানিনগরে আর একজনের বাড়ি হরিয়ানায়। আর তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদেই। মুর্শিদাবাদে এইরকম ঘটনা আরও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে শাসক দল তৃণমূলেরও। দলের সাধারণ সভায় ভুয়ো ভোটার তালিকার প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন মমতা। ভুয়ো ভোটার দিয়ে তালিকা ভরিয়ে ভোটারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য তৃণমূলকে দায়ি করেছিলেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী। বিজেপিও পিছিয়ে নেই।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও দলবল নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে ভুয়ো ভোটারের ব্যাপারটি ভাল করে খতিয়ে দেখতে আধিকারিকদের অনুরোধ করে এসেছেন। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষ হন্যে হয়ে নেট মাধ্যমে নিজের এপিক নম্বর মিলিয়ে দেখে নিতে চাইছেন কোথাও তাঁর নকল মিলছে কি না। নির্বাচন কমিশনই বা বসে থাকে কেন। তার আজ রবিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিতর্কে রাশ টানতে চেয়েছে বলেই অনুমান।
যদিও বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখার কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। রবিবার বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সংগঠনের সভাপতি অপূর্ব সরকার নিজেই সেই কাজ যেমন শুরু করেছেন তেমনি তার সংগঠনের একাধিক পুরসভা, পঞ্চায়েতেও সেই কাজ রবিবার থেকেই শুরু করেছেন কর্মীরা।

ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের সংখ্যা বেশি মুর্শিদাবাদে। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় এমনটাই দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনই তিনি দলের জেলা সভাপতিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বুথ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে একটা একটা করে নাম যাচাই করে দেখতে। সেই নির্দেশ শনিবার নিচুতলায় পৌঁছে দিলেন তৃণমূলের মুর্শিদাবাদের দুই সভাপতি খলিলুর রহমান ও অপূর্ব সরকার।

শনিবার খলিলুর ফরাক্কার বিধায়ক মণিরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে নুরুল হাসান অডিটোরিয়ামে এক বুথভিত্তিক কর্মীসভা করেন। সেখানে কীভাবে তালিকা সংশোধনের কাজ বুথ কর্মীরা করবেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ যেমন দিয়েছেন তেমনি ভোটারদের কাছে গিয়ে সরকারি প্রকল্পগুলির কথাও যেন কর্মীরা তুলে ধরেন এদিন সে নির্দেশও দিয়েছেন খলিলুর।
একইভাবে শনিবার দলের বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বে থাকা নেতা-নেত্রীদের নিয়ে জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করে একই বার্তা দিয়েছিলেন আর এক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভিড।