
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যে পরিবর্তনের জমানায় কোনও ছাত্র সাংসদ নির্বাচন হয়নি। সেই নির্বাচনের দাবি নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের নেতা কর্মীরা স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে বেঁধে যায় ধুন্দুমার কান্ড। অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায় এক পড়ুয়াকে। আর এক বর্ষীয়ান অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রের গাড়ির চাকায় আহত হয়েছে এক এসএফআই কর্মী।
সেই দৃশ্য দিনভর টিভির পর্দায় দেখেছেন বঙ্গবাসী। পাল্টা ব্রাত্য বসুর গাড়ির কাচ ভাঙচুর সহ তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনাস্থলে ছাত্রদের আড়ালে বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছিল তা অস্বীকার করেনি কোনও পক্ষই। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার আবর্তিত হয়েছে রাজ্য। প্রসঙ্গত, শাসক দল পরিচালিত অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা এই ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা রুজু হয়েছে। ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকেও পাল্টা দুটি মামলা হয়েছে যাদবপুর থানায়। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছে।
এদিকে রাত পোহালে শুরু হবে রাজ্যের শেষ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় হু হু করে পরীক্ষার্থী কমেছে। আগামী বছর থেকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে হবে উচ্চমাধ্যমিক। কিন্তু এবছর সেই পরীক্ষার শুরুর দিন অশান্তির আভাস মিলেছে বঙ্গে।বাম ছাত্র যুব সংগঠন এসএফআই রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যদিও এই বন্ধের বাইরে রাখা হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের।
রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে সমাজমাধ্যমে অবশ্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রেখে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কথা প্রচার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এটাও বলা হয়েছে, ” ছাত্র স্বার্থে এমন কোনও কর্মসূচি হতে পারে না।”
তবে একদিকে ছাত্র ধর্মঘটের মোকাবিলা করা অন্যদিকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতিকে পক্ষে টানতে মরিয়া শাসক দল রবিবার থেকেই পথে নেমেছে। পাল্টা পথে নেমে ঘটনার নিন্দায় সরব রাজ্য বামফ্রন্টও।
বহরমপুরে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্রাত্য বসুর ওপর আক্রমণের নিন্দা করে একটি মিছিল শহর পরিক্রমা করে। তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি সুদীপ সিংহরায়, প্রবীণ নেতা অশোক দাস, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান বিশ্বাস সহ প্রথম সারির নেতারা সামনে থেকে সেই মিছিলকে নেতৃত্ব দেয়।
পাল্টা ছাত্রদের ওপর হামলার নিন্দা করে বহরমপুরে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকেও একটি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষামন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ করে কিছুক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করেন বাম নেতা কর্মীরা। বামফ্রন্টের জেলা আহবায়ক জামির মোল্লা মিছিলের নেতৃত্ব দেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ” দীর্ঘদিন বন্ধ ছাত্র সাংসদ নির্বাচনের দাবি জানাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে ছাত্ররা। একজন শিক্ষামন্ত্রীর স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিবাদে এই মিছিল।”
রাত পোহালে মুর্শিদাবাদ জেলার ১১৮ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রায় ৪৩ হাজার পরীক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে আগামী কাল থেকে।