সংবাদ প্রতিনিধি, কলকাতাঃ এক অন্যায়ের ডবল সাজা। আইনের হাত ধরে এক ট্রাক চালককে সেইরকম সাজা শুনিয়েছিলেন পরিবহন দফতরের আধিকারিকরা। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানে। সূত্রের দাবি, ফিটনেস শংসাপত্র না থাকায় পণ্যবাহী ট্রাককে সাড়ে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এখানেই না থেমে ওই ট্রাককে একটি বেসরকারি গ্যারেজে গত আট মাস ধরে আটকে রাখা হয়। দিন প্রতি গ্যারেজের ভাড়া ১৭৫টাকা। এবং কোনওরকম নথি ছাড়াই ট্রাককে এভাবে আটকে রাখার ঘটনা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে।
বর্ধমান আঞ্চলিক পরিবহন বিভাগের একপ্রস্থ সমালোচনার পর শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভা ঘোষ নির্দেশ দিয়েছেন, ফিটনেস শংসাপত্র না থাকায় সাড়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে দিলেই ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই ট্রাক ছেড়ে দিতে হবে আঞ্চলিক পরিবহন বিভাগকে। আদালতের বক্তব্য, পরিবহন দপ্তর জরিমানা হিসেবে টাকা ধার্য করেছে। তারপরে গাড়িটিকে এক কথায় আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু তার কোনও সিজার লিস্ট করা হয়নি। যা বেআইনি।
মামলাকারীর আইনজীবী অরিন্দম দাস আদালতে বলেন, গাড়ির যথাযথ নথি না থাকায় তাকে একদিকে জরিমানা করা হলো, আবার একই কারণে সেই গাড়ি বেআইনিভাবে আটক করা হলো। একই অপরাধের একই সঙ্গে দু’রকম সাজা হতে পারে না। আসলে দাবি করেও মোটা টাকা হাতাতে না পেরে ট্রাকের মালিকের টাকা অন্যভাবে খসিয়ে দিতেই গায়ের জোরে ট্রাকটি বেসরকারি গ্যারেজে আটকে রাখা হয়েছিল বলে আদালতে ইঙ্গিত দেন ওই আইনজীবী।
আরও পড়ুনঃ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে সাধুদের মিছিলঃ কার্তিক মহারাজ
হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরে রাজ্যের পণ্য পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত ট্রাক মালিকরা আশার আলো দেখছেন। তাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে সামান্য ত্রুটি পেলেই নানান ছলচাতুরি করে ট্রাকের থেকে মোটা টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন কিছু অসাধু অফিসার ও কর্মী। কোথাও কোথাও এদের সঙ্গ দেয় পুলিশও। আর যেহেতু কমার্শিয়াল গাড়ির ব্যবসা করতে হয়, তাই বহু ক্ষেত্রেই মালিকরা মেনে নিতে বাধ্য হন বেআইনি দাবি-দাওয়া। কিন্তু হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরে এই নিয়ে তারা বৃহত্তর স্বার্থে প্রচার করতে চান ট্রাক মালিকরা।