তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন নেতা পেল ভোটের আগে

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ ভোট বড় বালাই। লোকসভা নির্বাচনের মুখে রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনকে চাঙ্গা করতে উদ্যোগী হল তৃণমূল। প্রায় বছর তিনেক অঘোষিত থাকার পর শুক্রবার তৃণমূলের শিক্ষকদের নেতা ঠিক করে দিলেন বিধায়ক ব্রাত্য বসু। মুর্শিদাবাদের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্ব বর্তেছে প্রাক্তন শিক্ষক দিলীপ সিংহরায়ের উপর। দলনেত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে দিলীপ বলেন, “সবাইকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে। এই মূহুর্তে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে, দলের গায়ে কোনও কালি লাগাতে দেব না।”

শুনুনঃ CEO-র বার্তা

বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কাজের সুবিধার্থে মূল জেলা সংগঠনকে দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছিল তৃণমূল ভবন। সেই পথ ধরে দু’ভাগ হয়েছিল সব শাখা সংগঠনও। অন্য শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব পদ ঘোষণা হলেও শিক্ষক সংগঠনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভাগ করা হয়নি। অথচ ওই সংগঠনের সদস্যরা প্রত্যেকেই জানতেন সংগঠনকে দুই ভাগে ভাগ করা হবে। কিন্তু কবে হবে সে কথা কেউ হলফ করে বলতে পারছিলেন না। সেই শ্রুতিতেও একই সঙ্গে সিলমোহর দিল তৃণমূলের রাজ্য নেতারা।

তৃণমূল শিক্ষা সেলের এক নেতার কথায়, লাগাতার গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তৃণমূলের জেলা সংগঠনের শীর্ষ নেতারা কারও নাম সুপারিশ করলেই গোল বাঁধছিল ঘরে-বাইরে। বাদ ছিল না শিক্ষক সংগঠনও। ABTA-র কাছে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পিছিয়ে যাচ্ছিলেন শিক্ষকরা। অলিখিতভাবে বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠন সামালাচ্ছিলনে প্রবীর ভট্টাচার্য। যদিও তাঁর বিরুদ্ধেও হাজারও অভিযোগ জমা পড়েছিল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। তাই বিতর্কিত তুলনায় নবীন প্রবীরকে সরিয়ে প্রবীণ দিলীপের হাতেই ন্যস্ত হয়েছে সংগঠনের ভার।

তবে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের মূল সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি শাওনি সিংহরায়ের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন দিলীপ। প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা করেছেন। নাগারে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন দলের একাংশ শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর। যা একসময় অস্বস্তিতে ফেলেছিল জেলা নেতাদের।

দিলীপ বাবু এদিন অবশ্য বলেন, ” আমি গঠনমূলক সমালোচনা করেছি।” কারণ কী? প্রাক্তন WBTA সদস্য ও তৃণমূল শিক্ষা সেলের প্রাক্তন প্রতিষ্ঠা সভাপতি দিলীপ বলেন, ” প্রথম দিন থেকে বহু রক্তঘাম ঝরিয়ে সিপিআই-এমের যে বলগাহীন সন্ত্রাস তার বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা সংগঠন করেছিলাম। একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলাম। সেই জায়গা থেকে প্রাক্তন রাজ্য নেতৃত্ব ও বর্তমান শিক্ষক সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব সরে এসেছিল। একটা ট্রেড ইউনিয়ন করতে গেলেও কিছু আইনকানুন জানতে হয়। সেইসব অজানা-অশিক্ষিত লোকের হাতে রাজনীতিটা চলে এসেছিল। মানুষের কোনও কাজে আসছিল না। তাই হতাশ হয়েছিলাম।” তবে দলীয় সূত্রে দাবি, দল নবীন প্রবীণে ভাগ হয়ে যাওয়ায় সংগঠনে পিছনে সারিতে চলে গিয়েছিলেন দিলীপ বাবু। এর আগেও শিক্ষক সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

একইভাবে শেখ মহম্মদ ফুরকানকে সরিয়ে জঙ্গিপুর শিক্ষক সংগঠনেও ঘোষণা হয়েছে নয়া শিক্ষক নেতার নাম। একইভাবে বদল হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights