
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ভূস্বর্গে বেড়াতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে লাশ হয়ে। কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত তাঁরা। যেভাবে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তিরিশটি প্রাণ, ইন্টারনেটের দৌলতে সেই ভিডিও আজ ভাইরাল। আর তা দেখে আঁতকে উঠছে বিশ্ব। প্রশ্ন জাগছে ” এমনও হয়!” ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত সরকার বুধবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে।
সেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। সেই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হল আটারি সীমান্ত। পাকিস্তানিদের ভারতে প্রবেশও নিষিদ্ধ করল ভারত। পাকিস্তানে অবস্থিত ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনারকেও দেশে ফেরানো হবে বলে জানানো হয়েছে। ভারতে বর্তমানে যেসমস্ত পাকিস্তানিরা রয়েছেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে বলেও জানান বিদেশ সচিব।
তবে এই ঘটনা যে আগামী পর্যটকদের কাছে ‘বড় আঘাত’ তা মেনে নিচ্ছেন বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদের ভ্রমণ সংস্থাগুলি। বহরমপুরের একটি ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার গুপীনাথ দাস মুর্শিদাবাদ সহ প্রতিবেশী জেলার ভ্রমণ পিপাসুদের পর্যটনের ব্যবস্থা করেন। এই মূহুর্তে তাঁর সংস্থা থেকে কাশ্মীরের তিরিশ জনের একটি দল শ্রীনগরে রয়েছে। তাঁরা ফিরে আসবেন ২৯ তারিখ। ভ্রমণের তালিকায় ছিল পহেলগাঁও। কী করবেন কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তাঁরা। গুপীনাথ বলেন, ” পরিস্থিতির দিকে সবাই নজর রাখছে। যে খোলা মন নিয়ে গিয়েছিল তা যে নেই কথা বললেই বোঝা যাচ্ছে। তবে এতগুলো টাকা খরচ করে গিয়েছেন, বারবার তো যাওয়া সম্ভব নয়। তাই হয়ত অপেক্ষা করছেন সরকারি নিরাপত্তার আঁটোসাঁটো হওয়ার আশায়।”
তবে তাঁর সংস্থা থেকে ফের কাশ্মীর যাওয়ার দিনক্ষণ ছিল এই সপ্তাহের শেষের দিকে। পর্যটকরা সেই ভ্রমণ বাতিলের আবেদন করেছেন বলেও জানান গুপীনাথ। সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিয়ে তেমন কোনও আশ্বাস না দেওয়ায় এই মূহুর্তে কাশ্মীর ট্যুর বাতিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জানান ওই দলেরই একজন সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুর্শিদাবাদ ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবজ্যোতি ভৌমিক বলছেন, ” গত পনের বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ পিপাসু মানুষের পা পড়ত কাশ্মীরে। পর্যটন সংস্থাগুলোও ভাল আয় হতো এই জঙ্গি হামলা সে আয়ের ক্ষেত্রে একটা বড় আঘাত।” তাঁর সংস্থার পক্ষ থেকেও মে মাসের দুটি ট্যুর বাতিল করা হয়েছে বলে জানান শিবজ্যোতি। তিনি বলেন, ” অথচ এখনও কাশ্মীরের কোনও হোটেলের রুম খালি নেই। সব বুক আছে মে মাস পর্যন্ত।” সেইসব হোটেল, রেস্তরাঁ, গাড়ি সব জায়গায় আগাম টাকা দিয়ে বুক করা হয়েছে। এখন বুকিং বাতিল করলে শর্ত সাপেক্ষে সেই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না। ফলে যাঁরা যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন তাঁরা ট্যুর বাতিল করায় পর্যটকদের মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি হবে, তেমনি নিজেদের সুনাম আর সম্পর্ক ঠিক রাখতে গিয়ে ভ্রমণ সংস্থাগুলোরও আর্থিক ক্ষতি হবে বলে জানান শিবজ্যোতি।