
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূলে ফিরছেন মোশারফ হোসেন মন্ডল ওরফে মধু। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল মঙ্গলবার তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা কার্যালয়ে ফের দলীয় পতাকা তুলে নেবেন হাতে। তার প্রস্তুতিও সারা। সেই গুঞ্জন প্রকাশ্যে আসতেই সোমবার জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস সাংবাদিক ডেকে মোশারফ হোসেনকে দল থেকে বহিস্কারের কথা জানান। মোশারফ জয়ন্তকে কংগ্রেসের নেতা বলে মানতেই চান না। তিনি বলেন, ” ও আবার কে কংগ্রেসের? আমি দিন তিনেক আগেই জেলা সভাপতিকে চিঠি লিখে কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য ও জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। সেই চিঠির কপি প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকার, অধীর চৌধুরীকেও পাঠিয়েছি। ” মধু দলে ফিরলে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খানের হাত শক্ত হবে বলেই মত নওদার একাংশ তৃণমূলের।
অভিজ্ঞরা বলেন, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু হয় না। নওদার মধুই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। চার বছর দু’মাস আগে তৃণমূলের বর্তমান জেলা কার্যালয়ের বাম দিক থেকে একশো মিটারেরও কম দূরত্বে সমবায়িকার যে আলোচনা কক্ষ, সেখানে দ্বাররুদ্ধ বৈঠক শেষে তাঁকে তৃণমূল থেকে বহিস্কার করেছিলেন নওদার ভূমিপূত্র সাংসদ আবু তাহের খান। তখন তিনি তৃণমূলের জেলা সভাপতিও। এলাকায় জনশ্রুতি, নওদায় আবু তাহের ও তাঁর ভাগ্নে সফিউজ্জামান শেখ ওরফে হাবিবের সঙ্গে দা-কুড়ুল সম্পর্ক মধুর। সেই সম্পর্কের কারণে নওদায় মধুর প্রতিশোধ নিতে ২০২১ এর ফেব্রুয়ারি মাসে মধু কংগ্রেসে ফেরেন অধীর চৌধুরীর হাত ধরে। সেই জায়গাটা তৃণমূলের বর্তমান জেলা কার্যালয়ের ডান দিক থেকে ঢিলছোড়া দুরত্ব টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে। কাল দুপুর তিনটে সাড়ে তিনটের সময় তৃণমূল কার্যালয়ে তাঁর বাম দিক দিয়েই ঢোকার কথা।
মধুকে দিয়ে বাঘ মারবার পরিকল্পনায় ২০২১-র নওদা বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। কিন্তু সংখ্যালঘু মধু হেরে যান সাহিনা মমতাজের কাছে। এই সাহিনা মমতাজও নওদায় তাহের ও হাবিবের বিরোধী। বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া ইস্তক কংগ্রেস মোহ ক্ষীণ হচ্ছিল মোশারফের। সেই ভাঙা মন নিয়েই অধীর চৌধুরীর পাশে পাশে ঘুরছিলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি। জেলা কংগ্রেসে রদবদল হওয়ার কথা ভেসে উঠতেই মধুও ভেবেছিলেন দলে তাঁর গুরুত্ব বাড়বে।
কিন্তু সে সব কোথায়। কংগ্রেস আছে কংগ্রেসেই। মধুও অবস্থা বুঝে ফের তৃণমূলে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন বিধায়কের সঙ্গে কথা বলে। বিধায়কও খবর পাঠালেন রাজ্যে। এদিন সাহিনা বললেন, ” আমি অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিলাম,অবশেষে রাজ্য মেনে নেওয়ায় মধু ফের তৃণমূলে ফিরছে।” তবে কী কোনও পদের বিনিময়েই মধু ফিরছেন। সাহিনা এবার বলেন, ” দল যা ভাববে তাই হবে। সেসব তো আমি জানি না।” মধুও বললেন, ” আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবেই তৃণমূলে ফিরছি। আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে আমি তাই পালন করব।” কেন ফিরছেন? মধু বলেন, ” অধীর চৌধুরী নেতৃত্বে যে জেলা কংগ্রেস চলছে সেই কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের সুরে কথা বলছে। সংখ্যালঘু সজ্জন ব্যক্তি জেলা সভাপতি আবু হেনা এই দলে মর্যাদা পায় না। সংখ্যালঘু মুসলিম এই দলে মর্যাদা পায় না।” ২০১৩ সালে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তিনি অবশ্য জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন। পরে ২০১৬ সালে সদলবলে কংগ্রেস ছেড়ে জেলা পরিষদ তুলে দিয়েছিলেন তৃণমূলের হাতে। আবু তাহেরকে মধুর প্রত্যাবর্তন নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন রেখে দেন।
Very good https://is.gd/tpjNyL