
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ একটা লম্বা সময় পরে ২০১৪ তে ক্ষমতায় ফিরে বিজেপি সরকার তখন নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্নে বুঁদ। ক্রমে ছোট হয়ে আসা সরকারি চাকরির পাশাপাশি দেশ তখন ধুঁকছে দূরারোগ্য বেকারত্বে। অথচ দেশ জুড়ে ফি বছর পাশ করছেন শয়ে শয়ে ইঞ্জিনিয়র। নামী দামি কোম্পানিও নিয়োগে রাশ টানছে। সেই সময় নতুন নতুন ব্যবসায় উদ্যোগী হতে তরুণদের উৎসাহ দেওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনও বিকল্পের হদিশ দিতে পারে নি মোদি সরকার। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে নেওয়া স্টার্টআপ ব্যাবসার পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ পেতে আরও ছ’মাস তখন গড়িয়ে গিয়েছে। নতুন ব্যবসায়ীদের জন্য তৈরি হয়েছে ১০ লক্ষ কোটি টাকার তহবিল। তিন বছরের কর ছাড় সহ মিলছে নানান সুবিধা। ২০২৫ এর জানুয়ারিতে দেশে স্বীকৃত স্ট্যার্টঅ্যাপ ব্যবসা ১ লক্ষ ৫৯ হাজার।
সরকারের পরিকল্পনার বছর দুয়েক পরে ২০১৮ সালে এম.সিএ পাশ বহরমপুরের তিন তরুণ-তরুণী মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির মোটা বেতনের হাতছানি দূরে সরিয়ে বহরমপুরে খুলে ফেললেন সফটওয়্যার কোম্পানি WebWorldTech বা ওয়েব ওয়ার্ল্ড টেক। অ্যানড্রয়েড তো বটেই আইওএস প্লাটফর্মে সাপোর্ট করবে এমন মোবাইল অ্যাপ, আধুনিক ডিজাইনের ওয়েবসাইট, গ্রাফিক্স ডিজাইন তো ছিলই, বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়েও সুনাম কুড়িয়েছে এই কোম্পানি।
নিজভূমে পেশাদার সফটওয়্যার ডেভলেপার হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ছিল স্রোতের বিপরীতে হাঁটা। কৌশিক শর্মা, জয়দ্যূতি সরকার ও মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়রা তখন ছুটছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্নে তখনও বিভোর জনমন। সেই সুযোগ পকেটে পুরতে সময় না লাগলেও বিশ্বাস অর্জন করে এগিয়ে যাওয়া ছিল যথেষ্ট কষ্টের।
শুরুর বছর দুয়েকের মধ্যেই ভয়াবহ করোনা গ্রাস করেছিল বিশ্বকে। সেই সময় আরও গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায় সফটওয়্যারের। নতুন ভাবনায় আবার বুঁদ হয়ে যায় ত্রয়ী। হোম ডেলিভারির অ্যাপ বানিয়ে মানুষের পাশে পরিসেবা পৌঁছে দিয়ে আদায় করেন ভরসা। হোঁচট খেতে খেতে এগিয়ে যাওয়া পথে ক্লান্তি এসেছে, তবু এগোনো থামেনি। ২০২১ সালে করোনার অন্ধকারে বহরমপুর কল্পনার মোড়ের কাছে পুরনো হাসপাতালের কাছে তৈরি হয়েছে নিজস্ব কার্যালয়। সেই কার্যালয় উদ্বোধন করেছিলেন মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বর্তমান বিধাননগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অনিশ সরকার। আজ তাঁদের কোম্পানিতে কাজ করে রোজগার করছে ২২ জন। জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলাতেও আজ এই কোম্পানির লোগো বহু মানুষের চেনা। WWT দিশা দেখাচ্ছে নয়া উদ্যোগপতিদের।