প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীই

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, মুর্শিদাবাদঃ বাংলায় কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীই। যদিও একাংশ সংবাদমাধ্যমের খবর, প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বর্তমান সভাপতি। যা মূহুর্তে ভাইরাল হয়। যদিও তা সম্পূর্ণ ‘গুজব’ বলে দাবি প্রদেশ কংগ্রেসের। ধন্দ থাকলেও ‘গুজব’এ ভেসেছিলাম আমরাও। সত্যতা জানার পর আমাদের সমস্ত মাধ্যম থেকে পোস্টার নিউজ মুছে ফেলা হয়।

কিন্তু এর অগোচরে প্রশ্নও থেকে গেল। কেন ছড়াল এমন ‘গুজব’ খবর? উদ্দেশ্য কী? ছড়াল কারা? সোর্স কী? না কি বিজিতের পরেও অপরাজেয় অধীর? যিনি সংবাদ মাধ্যমের সমস্ত আলো শুষে নিতে এখনও সমর্থ। আর তার আড়ালে পড়ে থাকছেন কেউ কেউ। যিনি চাইছেন অন্ধকার থেকে আলোয় আসতে। না কি আমাদের মতো সংবাদকর্মীদের তাৎক্ষণিকতায় শব্দের অর্থ বুঝতে ভুল হচ্ছে? না কি সবটাই ইলিউশন? উত্তর মিলছে না।

শুক্রবার ২১ জুন মৌলালী যুবকেন্দ্রে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের এক বর্ধিত জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তার নেতৃত্বে ছিলেন অধীর চৌধুরীই। নির্বাচনের পর এই সভা হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সেদিকে নজর ছিল সবার। কংগ্রেস সূত্রে জানা যায়, সভায় রাহুল গান্ধীকে লোকসভায় বিরোধী দলনেতার প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরপর ভোট সংক্রান্ত আলোচনাও হয়। সভার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির কাছে পাঠানো হবে বলে জানান প্রদেশ নেতা সৌম্য আইচ রায়। সভায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী, সর্ব ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মীর, বি পি সিং, শরৎ রাউত, সাংসদ ইশা খান চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা আব্দুস সাত্তার সহ অন্যান্য প্রদেশ এবং জেলা নেতৃবৃন্দ।

এদিনের সভায় আলোচনার বিষয়বস্তুও ছিল না সভাপতি নির্বাচন। যা ছিল তা হল আগামী দিনে কমিটি নির্বাচনের ভার সর্বভারতীয় সভাপতির হাতে তুলে দেওয়ার মতো গৃহিত সিদ্ধান্ত। তবুও ছড়াল বহরমপুরের বিজিত প্রার্থী অধীর চৌধুরীর পদত্যাগের ‘আষাঢ়ে গল্প’। প্রশ্ন হল সেই সংবাদ ছড়াল কে? সংবাদ পরিবেশনের সময় সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের কাছে সোর্স থাকে। সেই সোর্স কোথায় ছিলেন? ওই বৈঠকেই ছিলেন কী? দলেরই কেউ কী চাইছেন অধীর সরে যান? তাই কি সংবাদমাধ্যমকে ঢাল করে বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হল তাঁদের অন্তরের কথা? নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর অধীর চৌধুরীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ জানতে আগ্রহী আপামর জনসাধারণ। নিত্যদিন নতুন নতুন বিষয় বিশ্লেষণ উঠে আসছে আনুষঙ্গিক বিষয়কে কেন্দ্র করে। কখনও শোনা যায় তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন। কখনও শোনা যায় তিনি রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেবেন। কখনও শোনা যায় তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। সেই শোনা ও শোনানোর স্রোতে ভেসেছে শুক্রবারও। শোরগোল শেষে উঠে আসছে সেই তত্বই।

আরও পড়ুনঃ নিট পরীক্ষার দিন ঘোষণা করল এনটিএ

কংগ্রেস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের অক্টোবরে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচিত হন মল্লিকার্জুন খড়গে। দলের নিয়ম অনুযায়ী নতুন সভাপতির নেতৃত্বে রাজ্যগুলিতে নতুন কমিটি তৈরি হয়। কোথাও পুরনো কমিটি থাকে। কোথাও নতুন কমিটি তৈরি হয়। সভাপতির ক্ষেত্রেও নিয়মটা একই। কিন্তু খড়গের নির্বাচনের পর অস্থায়ীভাবে পুরনো কমিটির হাতেই রাজ্যের ভার (দু-একটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম) দিয়ে সর্বভারতীয় কংগ্রেস ফোকাস করে লোকসভা নির্বাচনে। সেই সূত্রেই অধীর চৌধুরী অস্থায়ী সভাপতি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সে কথাই পরিস্কার করে জানান তিনি।

তবে প্রদেশ সভাপতির ইস্তফা দেওয়ার সংবাদ সম্পূর্ণ ভুল বা গুজব নয়। Through proper channel অধীর চৌধুরী নির্বাচন শেষে লিখিতভাবে সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই চিঠি রাহুল গান্ধী গ্রহণ না করায় আগামীদিনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে থাকবেন অধীরই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights