সংবাদ প্রতিনিধি, কলকাতাঃ আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক মৃত্যু কান্ডে ২৪ ঘন্টার মধ্যে একজন দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধৃত ব্যক্তির ফাঁসির নিদান দিয়েছেন। শাসকদলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন “এই ধরনের অপরাধীদের এনকাউন্টার করে মারা উচিত।” অথচ ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার নাকি “স্কেপ গোট” বা বলির পাঁঠা। প্রকৃত দোষীকে আড়াল করতেই ‘নাটক সাজিয়েছে’ পুলিশ। এমনটাই দাবি একাধিক মহলের। প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীও বলেছেন ” আমার দৃঢ় ধারণা ধৃতের সঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ স্তরের নেতৃত্বের যোগাযোগ আছে। না হলে এত সাহস তার হত না। পরিকল্পিত ভাবে সেখানে ঢুকেছে ও ধর্ষণ করে খুন করেছে। একটা ঘরের মেয়ে আমাদের এইভাবে হারিয়ে গেল।”
আর দিনভর একাধিক অডিও ভাইরাল হয়েছে (যার সত্যতা সংবাদ হাজারদুয়ারি করেনি)। প্রায় সব ভাইরাল হওয়া অডিওতে দোষারোপ করা হচ্ছে আরজিকর হাসপাতাল কতৃপক্ষকে। ওই অডিওগুলির একটিতে এও দাবি করা হচ্ছে ধৃত সঞ্জয় রায়কে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। কিন্তু কেন? তার উত্তরও শোনা যাচ্ছে ওই অডিওতে (যার সত্যতা সংবাদ হাজারদুয়ারি করেনি)। সেখানে বলা হচ্ছে কোনও এক প্রভাবশালীকে আড়াল করতেই সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাধারণ মানুষের দাবি, সেই প্রভাবশালী কে? পুলিশ তার পরিচয় প্রকাশ্যে আনুক।
বিশেষ সূত্রের দাবি, আরজিকর হাসপাতালে সঞ্জয়ের চটজলদি পরিচয় দালাল হিসেবে। ওই হাসপাতালে সে রোগীভর্তি থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজে যে সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় তা কাউকে পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা সে করে দিত। কখনও পয়সার বিনিময়ে। কখনও ব্যক্তিস্বার্থে। আর সেই সূত্রেই ধৃতের সঙ্গে হাসপাতালের শীর্ষ স্তরের যোগাযোগ। দিকে দিকে মুখ খুলছেন চিকিৎসকরাও। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পদমর্যাদার একজন স্বাস্থ্য প্রশাসক দাবি করেছেন, ” ধৃতের হাসপাতালে যাতায়াত ছিল বলছে পুলিশ। তাই যদি হয় তাহলে ঘটনার দিনের কেন অন্যদিনগুলো সে হাসপাতালের কোথায় থাকতো, কোথায় যেত। পুলিশ মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দেখেই তো বুঝতে পারবে।”
একইসঙ্গে তিনি এও দাবি করেছেন “সেইসঙ্গে সিসিক্যামেরার ফুটেজও দেখতে হবে। যতদিনের সম্ভব। দেখা যাবে তাঁর সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত আছে।” ওই সিনিয়র চিকিৎসকের দাবি, “ঘটনা শুনলে মনে হয় মেয়েটি গণধর্ষণের স্বীকার। তাই ধৃত ও নির্যাতিতা উভয়ের পোশাক এবং ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহিত রক্তের নমুনার DNA টেষ্ট জরুরী। ” একইসঙ্গে ওই স্বাস্থ্যকর্তার দাবি, ” কলেজের স্বাস্থ্যকর্তাকে বিদায় না করলে তাঁর চাপে হাসপাতালের অন্য স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকরা পুলিশের জেরায় সত্যি বলতে ভয় পাবে।” সব মিলিয়ে বাড়ছে রহস্য। সমাজমাধ্যমে রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে চলছে সাক্ষর সংগ্রহ অভিযান। রাজ্য জুড়ে ঘটনার সত্য উদঘাটন ও প্রকৃতি দোষীকে গ্রেফতারের দাবিতে রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক স্তরে চলছে প্রতিবাদ কর্মসূচি।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের নেতা লুকিয়ে মুর্শিদাবাদে, ধরল পুলিশ