সংবাদ প্রতিনিধি, মুর্শিদাবাদঃ লালগোলা থেকে শিয়ালদহ আসার জন্য মুর্শিদাবাদবাসীর কাছে জনপ্রিয় ট্রেন ভাগীরথী এক্সপ্রেস। অথচ সেই ট্রেনের বেহাল দশা। যাত্রী সুরক্ষার লেশমাত্র নেই। সাধারণ কোচের কথা দূর অস্ত। চড়া ভাড়ার এসি কোচের অবস্থাও তথৈবচ। অথচ সম্পূর্ণ উদাসীন পূর্ব রেল কতৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে এমনটাই অভিযোগ যাত্রীদের। এদিকে রেল ভাড়া বাড়াতে কসুর করছে না কেন্দ্র। রবিবার সেই অভিযোগের সাক্ষী থাকলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবি অরিন্দম দাসও।
অরিন্দম বহরমপুর স্টেশন থেকে শিয়ালদহের টিকিট কেটেছিলেন ওই এক্সপ্রেসের এসি কোচে। C2 কোচের ৩৪ নম্বর আসন ছিল তাঁর জন্য বরাদ্দ। কিন্তু সেই আসনে বসতে গেলে ওই সিটটি ভেঙে পড়ে যায়। অরিন্দমের দাবি, অল্পের জন্য তিনি বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেয়ে যান। ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই ট্রেনের কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষককে বিষয়টি জানালে তিনি তা নিয়ে কোনও গা করেননি। উল্টে বলেন, তাঁরা বারবার বললেও ঊর্ধতন কতৃপক্ষ সেই কথায় কান দেয় না।
এরপর ট্রেন থেকেই এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) পূর্ব রেল কতৃপক্ষের কাছে ভাঙা আসনের ছবি সহ নালিশ ঠোকেন অরিন্দম। আর তাতেই তৎপর হয় রেল কতৃপক্ষ। শিয়ালদহ ডিভিসনের ডিআরএমের নির্দেশে অরিন্দমের আসন বদলে দেওয়া হয়। যদিও অরিন্দমের অভিযোগ, “কোনও আসনই রেলযাত্রীদের বসার উপযুক্ত নয়। এমনকি নামেই এসি কোচ। নূন্যতম সার্ভিসটুকুও হয় না।”

মুর্শিদাবাদ থেকে দ্রুত আসার জন্য এই ভাগীরথী এক্সপ্রেস চালু করা হয়েছিল। সকালে শিয়ালদহ যাওয়ার ও সন্ধ্যায় লালগোলা ফেরত আসার জন্য এই ট্রেনের উপর রোগী থেকে অফিস যাত্রী ভরসা বহু মানুষের। ভাড়া বেশি হলেও ইদানিং ট্রেনটির সাধারণ কামরায় ভিড় উপচে পড়ে। এসি ছাড়া অন্য সংরক্ষিত বগিতে মানুষের ভিড়। আর তা দেখার কেউ নেই।
এমনকি ওই ট্রেনের গতিও শ্লথ। সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ “এক্সপ্রেসের টিকিট কাটলেও পরিষেবা সাধারণ ট্রেনের থেকেও খারাপ।” রবিবারেই শিয়ালদহ থেকে লালগোলা ফিরছিলেন বহরমপুরের বাসিন্দা শ্যামল সরকার। তিনি বলেন, “বাথরুমের অবস্থার ছবিটাও তুলে ধরা দরকার। সাধারণ বগির বাথরুমের অবস্থাও ভয়ঙ্কর। এসি কিংবা রিজার্ভ কম্পার্টমেন্টের বাথরুমও অপরিষ্কার। রেল কতৃপক্ষ সব জানে। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয় না।” তাঁর দাবি, “এগুলো সয়ে গিয়েছে। যেমন সয়ে গিয়েছে প্রায় প্রতিদিনের ট্রেন দুর্ঘটনা।”
আরও পড়ুনঃ আরজিকর কান্ডে ভাইরাল একাধিক অডিও, অভিমুখ প্রভাবশালীর দিকে