
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এখনও ২৪ ঘন্টা কাটেনি। সংবাদ মাধ্যমের কাছে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির দাবি করেছিলেন। তারমধ্যেই শুক্রবার ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হল সুতির সাজুর মোড়ে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পরিস্থিতি সামলাতে এডিজি অজয় কুমার নন্দকে জঙ্গিপুর পাঠাচ্ছে নবান্ন।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পরিস্থিতি সামলাতে এডিজি অজয় কুমার নন্দকে জঙ্গিপুর পাঠাচ্ছে নবান্ন।
ফের ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের প্রতিবাদে শুক্রবার সংখ্যালঘুদের একাধিক মিছিল বের হয়। সেই মিছিল সব সাজুর মোড়ে পৌঁছলে ফের ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন কয়েকজন যুবক। এমনকি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। অবরোধ হঠাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট ছোড়ে আন্দোলনকারীরা। তারপরপরই ওঠে বোমাবাজির অভিযোগ। মূহুর্তে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা বিনা প্ররোচনায় কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানোর অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা।
পরিস্থিতি সামলাতে বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন পুলিশ সুপার। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত এলাকা যথেষ্ট উত্তপ্ত রয়েছে। পুলিশ অবশ্য নতুন করে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেই দাবি সূত্রের।
শুধু সাঁজুর মোড়েই নয়, এদিন ওয়াকফ আইনের বিরোধীতায় যাঁরা প্রতিবাদে নেমেছেন জঙ্গিপুরে তাঁরা ধুলিয়ান রেলস্টেশনেও অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। দুপুর তিনটে থেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে কামাখ্যা পুরী এক্সপ্রেস। রেলের দাবি, প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষের জমায়েত হয়েছিল রেলস্টেশনে। রাজ্য পুলিশ ও রেল পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় সেখানে।
পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাতে চলে না যায়, সেই কারণে সাধারণ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও উত্তেজিত এলাকা শান্ত রাখার আবেদন করা হচ্ছে। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মাঝে পরে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ আহত হয়েছেন বলে দাবি বিভিন্ন সূত্রের। তাঁদের দুজনের গায়ে গুলি লেগেছে বলে খবর। তবে নিহতের কোনও খবর নেই।
গত মঙ্গলবার সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধীতায় রঘুনাথগঞ্জ ও সুতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই দুই বিধানসভার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ সাবেক ১৪৪ ধারা জারি করেছিল। বন্ধ করা হয়েছিল ইন্টারনেট। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। তারপরেও আজ নিয়ে দুবার সুতি এলাকায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন ” সবাই জানে এইসব এলাকা যথেষ্ট স্পর্শকাতর। তা সত্তেও প্রশাসন কেন সক্রিয় হতে পারছে না? মুর্শিদাবাদের পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে নামুক। ” সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলেন, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
যদিও নানান মাধ্যমে ওই এলাকার উত্তপ্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা নামানোর কথা উঠলেও মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন তা ভুয়ো বলে জানিয়েছেন। ইমানি বলেন, ” এইরকম কোনও কথা হয়েছে বলে জানা নেই। যদি হয় তা বিএসএফই একমাত্র বলতে পারবে।” তবে ইন্টারনেট বন্ধের মেয়াদ বাড়াতে পারে প্রশাসন একইভাবে ১৬৩ ধারার মেয়াদ বাড়াতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজার রাখার আবেদন করেছেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী, জঙ্গীপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান।