আন্দোলিত জনতার কাছে ম্লান পুজোর কার্নিভাল

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ” মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও।” শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা এই কবিতার সার্থক রূপ, মঙ্গলবার দেখলেন বঙ্গবাসী। একদিকে সরকারি উদ্যোগে রেড রোডে পুজো কার্নিভাল, অন্যদিকে রানি রাসমনি রোডে দ্রোহের কার্নিভাল, দুইয়ের টানাপোড়েনে শেষ পর্যন্ত জিতে গেলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

নিহত সহকর্মীর বিচার চেয়ে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার খোলনলচের বদল চেয়ে গত মাস দুয়েকের বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলনে নেমেছেন রাজ্যের সব কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকরা। সরকারের টনক নড়াতে শেষ পর্যন্ত অনশনের রাস্তায় হেঁটে রাজ্যবাসীকে কার্যত অবাক করে একপ্রকার তাঁরা বাধ্য করেছেন পক্ষ নিতে।

তাঁদের দেখে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে একাদশীর দিন কেউ অরন্ধন, কেউ ছ থেকে বারোঘন্টা উপোস করে জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশনের পাশে থেকেছেন। সেখানেও মঙ্গলবার সরকারি কার্নিভালের বিরোধীতায় জুনিয়র চিকিৎসকদের ডাকে মানববন্ধন গড়ে পুজো কার্নিভালকে কোণঠাসা করেছেন নাগরিক সমাজ। একইভাবে বর্ধমান শহরও এদিন জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বৃষ্টি উপেক্ষা করে। কবিতায়, গানে প্রতিবাদে বাদ ছিল না রায়গঞ্জ, শিলিগুড়ির মতো শহরও। মঙ্গলবার রানি রাসমণি রোডেও এদিন জনতার স্রোতে ম্লান হয়েছে পুজোর কার্নিভাল।

অনশন মঞ্চে হাজির হয়ে আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে অপর্ণা সেন বলেছেন, ” এত মানুষের লড়াই বিফলে যেতে পারে না। এটা মানুষের কার্নিভাল। এটাই আসল কার্নিভাল।” যত সময় গড়িয়েছে বল্গাহীন জনতার স্রোত মিশেছে দ্রোহের কার্নিভাল। প্রায় সবার মুখেই ছিল একটিই শ্লোগান “জাস্টিস ফর আরজি কর।” মিলিত সেই কন্ঠস্বরে উধাও পাশের রেড রোডে উদযাপিত উৎসবের কাঁসর ঘন্টার বোল। এমনকি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কার্নিভাল বয়কটের মিছিলও কার্যত ছুঁতে পারেনি লক্ষ্মীপুজোর আগের দিনে আন্দোলিত জনস্রোতকে। তবে সেই জনতার একটা অংশের বিরুদ্ধে মন্ত্রী সুজিত বসুর গাড়ি লক্ষ্য করে বোতল ছোড়ার অভিযোগ যেমন উঠেছে তেমনি ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে ঘিরে গো-ব্যাক শ্লোগানও দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।

তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ অবশ্য তা মানতে নারাজ। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ” উৎসবের কার্নিভালে রেকর্ড সংখ্যক পুজো, ভিড়, রেকর্ড বিদেশি, পারফরম্যান্সে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র। এঁরা সবাই তিলোত্তমার ন্যায়বিচারও চান। দ্রোহের কার্নিভালের নামে কিছু বাম, অতি বামের রাজনৈতিক কিছু জমায়েত, বিঘ্ন ঘটানোর জন্য। জুনিয়র ডাক্তার এবং কিছু বাম মিলে কার্নিভাল ফেরত জনতাকে যানজটে ফেললেন। নিজেদের এলাকার দিকে ফেরার পথে পুজো কমিটির সঙ্গে অসভ্যতা করল কিছু লোক। কোনো পুজো কমিটি প্ররোচনায় পা দেয়নি। কিন্তু দুর্গা কার্নিভাল বিঘ্নিত করার এই মরিয়া চেষ্টা মনে রাখা ভালো।

আরও পড়ুনঃ দ্রোহের কার্নিভালে মিলল অনুমতি,ছন্দে পক্ষ নিলেন সব্যসাচী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights