মোঃ মিজানুর খান
সীমান্ত লাগোয়া কাঁটাতার ঘেরা লালগোলার বাসিন্দা মুনজিলার জীবনও যেন কাঁটায় কাঁটায় ঘেরা। মাত্র ন’মাস বয়সে ভুল ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় তার দুই হাতের কব্জি থেকে বাকি অংশ এবং দুই পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ শোচনীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।ছোট্ট মেয়েটির বেঁচে থাকাই দুষ্কর হয়। একটিও আঙুল না থাকা সত্ত্বেও কেবল কব্জির জোরে লড়তে লড়তে সে আজ গ্র্যাজুয়েট।
চার সন্তানের পিতা জামাল সেখের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। বাড়িতেই ছোট্ট একটা দোকান চালিয়ে সংসার নির্বাহ করেন, মা গৃহবধূ। গ্রামীণ পরিমণ্ডলে নানান বাধা-বিপত্তি সহ্য করে দিনযাপন করলেও তাঁরা তাঁদের সন্তানকে নিরক্ষরতার আঁধারে নিমজ্জিত রাখতে চাননি। তাই মুনজিলাও হাল ছাড়েনি। অপ্রতিরোধ্য উদ্যমে বাবা-মায়ের সাহচর্যে লালগোলা কলেজ থেকে সে ২০২২ সালে স্নাতক হয়।
সামান্য অজুহাতে হাত পা থেকেও যারা উদয়াস্ত দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে, পরান্নভোজী হয়ে জীবন কাটাতে চায় মুনজিলা তাদের দলে নয় বরং উল্টো স্রোতে চলা স্বপ্নদর্শিনী। হয়তো তাইই শারীরিক, আর্থিক ইত্যাদি নানান প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সে কেবল পড়াশোনাই করে না ছবিও আঁকে যা এলাকায় একেবারে বিরল চিত্র।
চলৎশক্তিহীনতা নিয়েও সে একটু একটু করে স্বপ্ন রচনা করে প্রতিযোগিতার প্রান্তরে দৌড়াতে চায়, মনের পায়ে ভর করে উঠে দাঁড়াতে চায়, সাবলম্বী হয়ে আকাশ ছুঁতে চায়। যাবতীয় পঙ্কিলতা ঠেলে ফেলে সে যেন বলতে চায়-
” আমার সকল কাঁটা ধন্য করে ফুটবে ফুল ফুটবে
আমার সকল ব্যথা রঙিন হয়ে গোলাপ হয়ে উঠবে”
(মোঃ মিজানুর খান একজন চিত্রশিল্পী, ছবি আঁকার পাশাপাশি সমাজের ভালো মন্দে তাঁর তীক্ষ্ণ নজর, তারই ফসল এই লেখা, মতামত তাঁর ব্যক্তিগত)
সমৃদ্ধ হলাম। সংবাদ হাজার দুয়ারি এর উত্তরোত্তর সর্বাঙ্গীন শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।
Thank you