সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সরকারি কর্মীকে মাথা নিচু করে শাসকদলের নেতা, মন্ত্রীর কথা শুনতে হবে। তাঁরা যা বলবেন তাই মুখ বুজে সহ্য করতে হবে। না হলে ওই কর্মীর মেয়াদে ছেদ টেনে দিতে পারেন শাসকদলের কোনও নেতা বা মন্ত্রী। অন্তত রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির শনিবারের দাবি এমনটাই।
সরকারি জায়গা দখলকারিদের উচ্ছেদের নিদান দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সেই নির্দেশ মোতাবেক দীঘার তাজপুর সৈকতে বেআইনি উচ্ছেদ হঠাতে গিয়েছিলেন কাঁথির বনাধিকারিক মণীশা সাউ সহ বনদপ্তরের কর্মীরা। সূত্রের দাবি, এর আগে জবরদখলকারীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে কথায় কর্ণপাত না করে তাঁরা সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করেননি। শনিবার ফের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে তাতে বাধা দেন রামনগরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি। শুধু বাধা নয়, দলবল জুটিয়ে রীতিমত ওই মহিলা আধিকারিককে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেন মন্ত্রী। যুক্তিতে হেরে গিয়ে তাঁকে এলাকা ছাড়া করবারও হুমকি দিয়েছেন অখিল।
আর সেই ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ” আপনি এক জন জানোয়ার, বেয়াদব রেঞ্জার। আপনি সরকারের চাকর। মাথা নিচু করে কথা বলবেন। ” সেই ভিডিও দলের ফেসবুক পেজে পোস্ট করে মন্ত্রীর গ্রেফতারির দাবিতে মাঠে নেমে পড়ে বিজেপিও। ফেসবুকে লেখা হয় ” অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ করতে গেলে মহিলা ফরেস্ট অফিসারকে কুরুচিকর মন্তব্য ও পেটানোর হুমকি তৃণমূল মন্ত্রীর! এইসব মন্ত্রীদের নিয়ে মন্ত্রিসভা চালাচ্ছেন বাংলার মহিলা মুখ্যমন্ত্রী! যাদের হাতে অসুরক্ষিত বাংলার নারী সমাজ।” দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এটাই তৃণমূলের প্রকৃত ভাষা ও সংস্কৃতি।”
হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি শাসকদলও। দলের প্রাক্তন মুখপাত্র ও রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুনাল ঘোষ বলেন ” মন্ত্রী অখিল গিরির কথা এবং আচরণের বিরোধিতা করছি। এটা অবাঞ্ছিত। বনদপ্তর নিয়ে কিছু বলার থাকলে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে বলতে পারতেন। তার বদলে মহিলা অফিসারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার দুর্ভাগ্যজনক। তবে সিপিএম, বিজেপির এনিয়ে বলার অধিকার নেই। ওরা এর থেকেও অনেক কুৎসিত কাজ বারবার করেছে।”
মন্ত্রী অবশ্য বিচলিত নন। তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে অযথা জলঘোলা হচ্ছে। আমি কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। ওই আধিকারিক রাতের অন্ধকারে দোকানগুলো করাত দিয়ে কেটে ফেলেন। আমি তার বিরোধিতা করেছি মাত্র।” বিষয়টি ভাল চোখে নেননি বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। তিনি ওই বনাধিকারিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ও তাঁকে আশ্বস্ত করেন। ফোন করে কথা বলেন কুনালও।