নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ CPIM কর্মীদের ছোড়া ইঁটের আঘাতে আহত পুলিশ কর্মীদের আঘাতের রিপোর্ট কোর্টে জমাই দিতে পারল না পুলিশ। সোমবার জামিন পেলেন ‘দোষী’ বাম নেতারা।
দলের আইন অমান্য কর্মসূচিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তিতে জড়িয়ে পড়েন সিপিএম নেতা কর্মীরা। চলতি মাসের ১৩ তারিখ বহরমপুর টেক্সটাইল মোড়ের সেই কর্মসূচিতে প্রতীকি আইন অমান্য করতে গিয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইঁট ছোড়ে তাঁরা। এই অভিযোগ তুলে পুলিশ আত্ম রক্ষার্থে টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটিয়েছিল বলে আদালতে সওয়াল করেন সরকার পক্ষের আইনজীবি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ‘দোষী’দের জেলে পাঠিয়ে আজ সোমবার পুলিশকে কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক অলোকেশ দাস।
সোমবার দুপুরে ওই বিচারকের এজলাসেই কেস ডায়েরি হাতে হাজির ছিলেন বহরমপুর থানার তদন্তকারী অফিসার। কিন্তু আহত পুলিশকর্মীর কোনও রিপোর্ট জমা দিতে পারেন নি তিনি। সরকার পক্ষে নীলাব্জ দত্ত ও বাম নেতৃত্বের পক্ষে বরিষ্ঠ আইনজীবি কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়, শৈলেন্দ্রনাথ সরকাররা এদিন সওয়াল করেন। কাঞ্চন বলেন, ” পুলিশ ৩০৭, ৩৩৫ এর মতো একের পর এক ধারা দিয়েছে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে। যার অধিকাংশেরই কোনও ভিত্তি নেই। পুলিশ যে খুনের ধারা যুক্ত করেছে, দাবি করেছে পুলিশ আধিকারিক আহত হয়েছে বলে। কিন্তু বিচারককে পুলিশ সেই তথ্য জমা দিতে না পারায় আমরা জামিনের আবেদন করি।” সরকার পক্ষের আইনজীবি নীলাব্জ বলেন, “কর্তব্যরত পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের মতো একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত বাম নেতাদের স্বাভাবিকভাবেই জামিনের বিরোধিতা করা হয়।”
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উভয় পক্ষের সওয়াল জবার শেষে ব্যক্তিগত দু’হাজার টাকা বন্ডে ধৃত ১৫ জন বাম নেতাকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা যায়। এদিন দলের নেতা কর্মীদের জেল হেফাজত থেকে ছাড়িয়ে আনতে বহরমপুরে হাজির ছিলেন ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতী সাহারা। ধৃত সহকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দলীয় কার্যালয় থেকে কোর্ট চত্বর পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। তাঁদের জামিন হওয়ার সংবাদ শেষে ধ্রুব, মীনাক্ষীরা বলেন “মানুষের দাবি নিয়ে লড়াই করা ডিওয়াই এফ আই, মজুর, কৃষকদের জেলে পুড়ে দাবিয়ে রাখতে চাইছে বর্তমান সরকার। কিন্তু সেটা যে সম্ভব নয় তা এতদিনে ওরা বুঝে গিয়েছে। যত জেলের ভয় দেখাবে তত লড়াইয়ের জেদ বাড়বে।”

পাওয়া ছবি।
প্রসঙ্গত, সেদিন টেক্সটাইল চত্বরকে রণক্ষেত্র তৈরির জন্য দায়ি করে ২০ জন সিপিএম নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা সহ ১৩টি ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। পনেরো জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করলেও বাকি পাঁচজন এখনও খোঁজ পায় নি বলে আদালতকে এদিনও জানিয়েছে তারা। সেদিন পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের প্রভাবে সিপিএম কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।