সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্য জুড়ে আজ শুক্রবার ১২ ঘন্টার সাধারণ ধর্মঘটের পাশাপাশি ছাত্র ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে এসইউসিআই। চলতি বছর স্বাধীনতার রাতে আরজিকর হাসপাতালে একদল দুষ্কৃতি ভাঙচুর চালায়। তছনছ করা হয় হাসপাতালের একাধিক বিভাগ। কী তাদের উদ্দেশ্য? সরকারি স্তরে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে দাবি করা হয়েছে। অসরকারি মতে, ওই কলেজে নিহত তরুণী চিকিৎসকের গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে যে সেমিনার রুমে, সেখানকার প্রমাণ লোপাট করতেই সেদিন রাতে গুণ্ডা নামানো হয়েছিল। আর ওই ঘটনাই ফের হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দেয়।

তার দায় রাজ্য সরকারের উপরে চাপিয়ে ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার এসইউসিআই এর রাজ্য সংগঠন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সেই ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব পড়েছে বাংলায়। বহরমপুরের স্বর্ণময়ী বাজারের এক আনাজ বিক্রেতা বলেন, “বনধে সমর্থন থাকলেও পেটের দায়ে আনাজ বেচতে বসেছি”। খাগড়ার এক বস্ত্র বিপণীর মালিক বলেন, ” গোটা বাজারে আজ অনেক দোকান খোলা। কিন্তু অন প্রোটেস্ট আমার ছোট দোকান আজ ১২ঘন্টা বন্ধ রাখলাম। আমিও একজন মেয়ের বাবা। ক্ষতি হলেও একটু না হয় সঙ্গ দিলাম।”

রাজনীতির ফায়দা তুলতে সাধারণ ধর্মঘটের রাস্তা বেছে নেয় রাজনৈতিক দলগুলি। সেই কর্মযজ্ঞে সমাজের একটা বড় অংশের সাধারণ মানুষের পূর্ণ সমর্থন না থাকলেও পরিস্থিতির চাপে সেই ধর্মঘটকে সমর্থন করতে হয়। তাতে রুজিতে টান পড়ে। সরকারি স্তরেও ধারাবাহিকতায় ছেদ পরে। তাতেও ফল ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। বাম আমলের ঘনঘন রাজনৈতিক বনধ বা হরতাল ডেকে রাজ্য অচলের কর্মসূচি নেওয়া হত। সেই কর্মসূচি নেওয়া হত বর্তমান শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকেও। কিন্তু রাজ্যে পালা বদলের পর নিজেদের রাজনৈতিক অস্ত্র অন্যের ক্ষেত্রে ভোঁতা করতে কঠোর হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি কর্মীদের ধর্মঘটের দিন কাজে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়। পুরনো হলেও সেই অস্ত্রের ব্যবহার তবুও ছাড়েননি রাজ্যের শাসক দল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
এদিন কলকাতা সহ রাজ্যের যেখানে যেখানে এসইউসিআই শক্তিশালী, সেখানেই ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে। কলকাতার একাধিক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ধর্মঘটিদের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। পুলিশ আন্দোলকারীদের কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। সকালে কোচবিহার ,উত্তরদিনাজপুর, বালুরঘাট, দিনহাটাতেও একই ঘটনা ঘটে। ডায়মন্ডহারবারে রেল অবরোধ ঘিরেও অশান্তি হয়।
মুর্শিদাবাদের কয়েকটি ব্লকেও এসইউসিআই কর্মীরা পথে নেমে প্রতিবাদে সামিল হন। বহরমপুরে মিছিল করে শহর পরিক্রমা করেন তাঁরা। তবে জেলার শহরে বা গ্রামে কোথাও এদিনের হরতালের সর্বাত্মক প্রভাব পড়েনি। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “কর্মীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক আছে।” এসইউসিআই নেতা কর্মীদের অবশ্য দাবি, ” আমরা কোথাও মানুষজনকে জোর করে বনধ পালন করতে বলিনি। তবে মানুষ রাজ্য সরকারের এই ঘৃণ্য শাসন ব্যবস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদের কোথাও শারিরীকভাবে কোথাও মানসিকভাবে সমর্থন জানিয়েছেন।”
আরও পড়ুনঃ আরজিকর ভ্যান্ডালিজমের দায় কার ঘাড়ে চাপালেন মুখ্যমন্ত্রী?