নবাবের শহরে আজ মুখ্যমন্ত্রী, যানজটের শঙ্কা

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বহরমপুর ঘেঁষা ইতিহাসের শহর মুর্শিদাবাদে আজ দুপুর একটায় প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি নবাব বাহাদুর স্কুলের মাঠে সেই সভা হবে। এই প্রথম রাজ্যের প্রধান নবাবের শহরে প্রশাসনিক সভা করবেন। সেই সভা ঘিরে জেলা প্রশাসনের যত না উদ্বেগ তার থেকে ঢের বেশি উন্মাদনা শাসক দল তৃণমূলের। শহরের প্রবেশ পথ থেকে যত এগোন যায় সভাস্থলের দিকে ততই ঘন হয়ে আসে ঘাসফুলের পতাকা। আজ সকাল থেকেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বাংলা বিহার ওড়িষার প্রাক্তন রাজধানী মুর্শিদাবাদ।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে জেলা প্রশাসন ও তৃণমূল দলের নেতাদের সারি সারি গাড়ি দিনরাত এক করে সভামুখী ছুটে যাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে শহরের।নতুন গ্রাম হয়ে সদর ঘাট ছুঁয়ে যত এগিয়ে যাওয়া যায় পাঁচরাহা মোড়ের দিকে ততই গতি রুদ্ধ হয়ে আসে স্বাভাবিক চলাচলের। আজ সেখানে উপছে পড়বে তৃণমূল নেতা কর্মীদের ভিড়, আর তা ভেবেই আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দা মিলন হাজরার মত অনেকে। মিলনের দাবি, ” এইটুকু শহরে একটা টুরিস্ট বাস ঢুকলে আর একটা চার চাকা এগোতে পারে না। সেখানে দিন রাত ছুটে চলেছে নেতাদের বড় বড় গাড়ি। আমাদের সাইকেল চালানোর সুযোগটুকুও নেই।”

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভাকে সফল করে তুলতে মরিয়া মুর্শিদাবাদ শহর তৃণমূলের সভাপতি তথা পুরসভার চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ ধর। এমনিতেই বহরমপুর টপকে লালবাগে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হওয়া নিয়ে শাসক শিবিরে উড়ছে হরেক জল্পনা। মেঘের আড়ালে কোন অপূর্ব কৌশলে ইন্দ্রজিৎ কাঁধ পেতে এই ভার নিলেন তারও জবাব একেক জন দিচ্ছেন এক একরকম। ইন্দ্রজিৎ অবশ্য সেসব মানছেন না। বলছেন, “আমি কোভিড কালেও যেমন দলের কর্মী হিসেবে কাজ করেছি এখন দায়িত্ব পেয়েও একইভাবে কাজ করছি।” যে মূল মঞ্চ থেকে আজ মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র শহর মুর্শিদাবাদের জন্য ১৪৫ কোটি টাকা উন্নতির জন্য ঘোষণা করবেন তা তৈরি হতে হতে ‘দিদি’র উড়ান হেলিপ্যাড হয়ত ছুঁয়ে ফেলবে। কিন্তু ‘দিদি’কে উৎসর্গ করা গান যেভাবে গত তিন দিন ধরে শুনছেন শহরবাসী তা যেন শীতকালীন এক উৎসব। হাজারদুয়ারি সংলগ্ন এক দোকানির খেদ ” সারা বছর শাসকের এই উন্মাদনা থাকলে ভাটা পড়ত না পর্যটনে।”

লালবাগ শহর কংগ্রেসের সভাপতি অর্ণব রায় বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা করতে শহরে আসছেন লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে। অথচ যাদের করের টাকায় এই সভা হচ্ছে তাদের জীবনই আজ ওষ্ঠাগত। যে পর্যটকদের জন্য এই শহরের মানুষের রুটি রোজগার সেই পর্যটককেই অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে গত দুতিন ধরে। কোথাও কোনও ট্রাফিক নেই। এমনকি একটা সিভিকও নেই পথ সামালানোর জন্য। সবাই আজ সভামুখী। দিনরাত গান বেজে চলেছে, সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। শাসকের এ এক ক্ষমতার প্রদর্শনী।” আজ তা ছাপিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বহরমপুর শহর তৃণমূলের এক কর্মীও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মীর দাবি, “ওইটুকু তো শহর। বহরমপুর থেকে গাড়িতে মিনিট পনের লাগবে। তাও সকাল সকাল না বেড়লে দিদি চলে যাওয়ার পর হয়ত পৌঁছাব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights