বিদ্যুৎ মৈত্র, সংবাদ হাজারদুয়ারিঃ
সন্দেশখালি কান্ড CPI(M)কে লড়াইয়ে শক্তি জুগিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক বাংলায় হারিয়ে যাওয়া জমি পুনুরুদ্ধারে নেমেছে তারা বছর দুয়েক আগেই। একুশের নির্বাচনে বিধানসভায় শূন্য হয়েছে বামফ্রন্ট। সেই শূন্য থেকে শুরু করে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলের মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাসে ভরপুর মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের দল। দিন-রাত এক করে আজ সন্দেশখালি তো কাল মেখলিগঞ্জ। এখনই উলুবেড়িয়া তো পরক্ষণেই ভগবানগোলা মানুষের মন পেতে ছুটছেন তাঁরা। সর্বত্র ফের লালঝান্ডা ওড়াতে যুবদের সঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন মহঃ সেলিম, সূজন চক্রবর্তীরা।
তবে এই দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আগে। নজরে পঞ্চায়েত রেখে গ্রামের ভিত শক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন কমরেডরা। তার ফলও পেয়েছিলেন। সেই ফলের ওপর ভিত্তি করে পঞ্চায়েতের সময় নেওয়া মডেলকে হাতিয়ার করে লোকসভা নির্বাচনে ফসল ঘরে তুলতে চাইছে সিপিএম।
রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসক দল যেদিন যে কর্মসূচি রাখছে বেছে বেছে সেই দিনগুলিতেই দলের বিশেষ কর্মসূচি রেখে সমানে পাল্লা দিচ্ছে সিপিএম। আগামী রবিবার ব্রিগেড ময়দানে জন সমাবেশের ডাক দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। সেই সভার নাম দেওয়া হয়েছে ” জনগর্জন সভা”। একই ফর্মাটে রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে কর্মী সমর্থকরা গিয়ে কলকাতার মাঠে জমায়েত হবেন। সেই সভার প্রচার সমানে যেমন চলছে রাস্তা ঘাটে। তেমনই জোর প্রচার চলছে সমাজ মাধ্যমে। আর ওই দিনই CPI(M) রাজ্যে দশ দিনে দশ কর্মসূচি নিয়েছে। আগামী কাল থেকে এগারো তারিখ পর্যন্ত রাজ্যের একাধিক জেলার মানুষের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে যাবেন নেতারা। ফারাক রেখেছেন এইটুকুই।
সন্দেশখালি কান্ড যে রাজ্যের শাসক দলকে বেশ খানিকটা ব্যকফুটে নিয়ে গিয়েছে তা শাসকদলের প্রথম সারির নেতাদের বক্তব্যে পরিস্কার। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর তৃণমূলের ‘বাঘা’ নেতারাও যে ‘চোট’ পেয়েছেন তা তাদের দেহ ভঙ্গিমাতেই ধরা পড়ছে। যদিও তাকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা।
আর শাসকদলের এই দূর্বল মুহুর্তকে কাজে লাগিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছতে মরিয়া হয়ে উঠেছে CPI(M). তাদের দাবি, শুধু সন্দেশখালি নয়, রাজ্যের সর্বত্র নির্যাতন, জমি লুঠ, পরিবেশ ধ্বংসের মতো ঘটনা ঘটছে। কিন্তু মানুষ সেইসব এলাকার “শাহাজাহান” দের দৌরাত্মে প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছে। “পুলিশ শাসক দলের পক্ষ” নেওয়ায় থানা থেকে দূরে নিজের মনে গুমরোচ্ছেন তাঁরা। সেই সমস্ত মানুষকে নির্ভয়ে এগিয়ে আসার ডাক দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও একইরকম কর্মসূচি নিয়েছিল দল। সেই “পাহারায় পাবলিক” কর্মসূচির মতো নয়া কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ” “জনতার কেসবুক- দিন বদলের সন্দেশ”।
বর্তমানে Social Media-য় পোক্ত CPI(M) তাদের https://www.leftsquad.in ওয়েবসাইটে একটি গুগল ফর্ম Embeded করেছে। তা দলেরই বিভিন্ন Social Media গ্রুপে সেই লিঙ্ক শেয়ার করেছেন। সাধারণ মানুষকে সেই ফর্ম পূরণ করে তাদের সেই সব এলাকার তথ্য জানানোর কথা বলেছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যাঁরা ওই ফর্ম পূরণ করবেন তাদের তথ্য গোপন রাখা হবে। সরাসরি ওয়েবসাইটে না গিয়েও একটি কিউআর কোড দেওয়া হয়েছে প্রচার পত্রে। সেই কোড স্কান করেও গুগল ফর্মটি পূরণ করতে পারা যাবে। মূলত আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্যই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।