খোরপোষের দাবিদার তালাকপ্রাপ্ত মুসলিম মহিলারাওঃ Supreme Court

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মুসলিম মহিলারাও বিবাহ বিচ্ছেদের (তালাকপ্রাপ্ত) পর স্বামীর কাছ থেকে খোরপোষ চাইতে পারে। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। একজন তালাকপ্রাপ্ত মুসলিম মহিলা তার স্বামীর কাছ থেকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ ধারা অনুযায়ী স্ত্রীদের ভরণপোষণ সম্পর্কিত আইনের অধীনে ভরণপোষণ চাইতে পারেন বলে যে রায় দিয়েছেন দুই বিচারপতি তা ঐতিহাসিক বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

সংবাদ সূত্রে জানা যায়, তেলঙ্গানা হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন খোরপোষ হিসেবে স্ত্রীকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল এক ব্যক্তিকে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই মামলার শুনানিতেই আজ মুসলিম মহিলাদের খোরপোষের অধিকারে আইনি সিলমোহর দিল আদালত। (Divorced Muslim Women Alimony Rule)।

খোরপোষ কোনও দাতব্য বিষয় নয়। সমস্ত ধর্মের বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলারাদের খোরপোষের দাবি মৌলিক অধিকারের মধ্যে পরে। এটা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা দেয় বলেও তাঁদের নির্দেশে জানিয়েছেন দুই বিচারপতি। তাঁদের যুক্তির ফারাক থাকলেও শুনানিতে তাঁদের রায় একই ছিল। তাঁদের মত ” স্ত্রী একজন গৃহকর্মী, আবেগগতভাবে এবং অন্যান্য উপায়ে তাঁরা স্বামীর উপর নির্ভরশীল। এই কথাটা একাংশ ভারতীয় পুরুষ স্বীকার করেন না।”

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালে শাহ বানো মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ ধারা ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেকের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু ১৯৮৬ সালে মুসলিম নারী (তালাকের অধিকার সুরক্ষা) আইনে তা লঘু করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ইদ্দতের সময় অর্থাৎ বিবাহ বিচ্ছেদ বা স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে যে সময়টুকু স্বামীর ঘরে থাকতে হয় সেই ৯০ দিন স্ত্রীর ভরণপোষণের ভার স্বামীর। ২০০১ সালে সেই রায় পরিবর্তন না করে শীর্ষ আদালত সংযোজন করেছিল, স্ত্রীর পরবর্তী বিয়ে অথবা নিজের উপার্জনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীর খোরপোষের দায় স্বামীর। সেদিক থেকে দেখলেও আজকের রায় একজন বিবাহ বিচ্ছিন্না মুসলিম মহিলাকে শক্তি দেবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

রোকেয়া নারী উন্নয়ন সমিতির মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক খাদিজা বানু বলেন, “সুপ্রীম কোর্টের রায়কে স্বাগত। এই রায়কে ভারতসরকার যদি বিল পাস করে আইন তৈরি করে তাহলে অনেক মেয়ে খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে।” তবে তিনি বলেন, “খোরপোষ দেওয়ার কথা মুসলিম আইনে থাকা সত্বেও আদালতের দুরাবস্থায় শুধু মুর্শিদাবাদ জেলাতে ৫০ হাজারের বেশি মামলা ঝুলে রয়েছে পনের বিশ বছর ধরে। আমরা তাদের নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি। তাদের খোরপোষ লড়াইয়ের আদায়েই আমরা আছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights