সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কাজে এল না ইন্ডিয়া জোটের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকার। দিল্লির আদালত শেষ বেলায় জানিয়ে দিয়েছে চলতি মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। শুনানি শেষে রায় দান স্থগিত থাকায় ক্ষীণ আশা জেগেছিল আম আদমি পার্টির সদস্যদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শূন্য হাতেই ফিরতে হল তাঁদের।
ইডির পক্ষে আইনজীবি এসভি রাজু আদালতে দাবি করেন, ” কেজরিওয়াল আবগারি কেলেঙ্কারির ‘কিংপিন’। শুধু তাই নয় ২০২২ সালের গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে সেই বেআইনি অর্থ ব্যবহারও করা হয়েছিল।” আপ নেতা সোমনাথ ভারতী বলেছেন, “মামলার কোনও যোগ্যতা নেই এবং সে কারণেই, ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত কমিয়ে ছ দিন করা হয়েছে। মোদী সরকার কীভাবে ইডি এবং সিবিআইকে অপব্যবহার করছে তা সবাই জানে। তারা গণতন্ত্রকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। দিল্লির জনগণ অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ম্যান্ডেট দিয়েছে, তাই তার সরকার চালানোর অধিকার আছে। আর তিনি তা করবেন।”
গোয়ার আপ সভাপতি অমিত পালেকার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, “নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের কেউই কোনো অর্থ পায়নি… আমরা যা কিছু খরচ করেছি তা আমাদের নিজস্ব পকেট থেকে করেছি এবং তার হিসাব দিয়েছি।” তিনি আরও দাবি করেন, “আসলে, বিজেপি নির্বাচনের সময় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে। আমাদের একমাত্র ত্রুটি ছিল যে আমাদের কাছে টাকা ছিল না… তবুও আমরা দুটি আসনে জিতেছিলাম। আমরা যদি বিজেপির মতো টাকা খরচ করতাম, তাহলে আমরা নির্বাচনে জয়ী হতাম।”
দুর্নীতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা। স্বাধীন ভারতে এই প্রথম একজন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেজরিওয়াল, তদন্ত সংস্থার একাধিক সমন বারবারি এড়িয়ে যাওয়ার ফলে এই গ্রেফতারি বলে দাবি করেছে একটি সূত্র। এদিকে দলের নেতার গ্রেফতারির প্রতিবাদে ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়ে আম আদমি পার্টির সদস্যরা।
নির্বাচনের দিন ঘোষণার পাশাপাশি নির্বাচনী আচরণ বিধি চালু হয়ে যাওয়ার পরে কীভাবে একজন ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রীকে কীভাবে গ্রেফতার করা সম্ভব? সেই প্রশ্ন তুলে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে। মোদী সরকার এবং বিজেপি’র আতঙ্ক স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেন সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো। তাদের দাবি, মোদী সরকারের কাজে জনতার ক্ষোভ সমানে বাড়ছে।
নিজেদের দুর্নীতি বেরিয়ে পড়া এবং নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়াতেও আতঙ্কে রয়েছে বিজেপি। বিরোধী নেতারা তাই প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে। অধীর চৌধুরীও একই সুরে বলেছেন, “ইন্ডিয়া জোটে থাকায় কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছে ইডি।” বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির নিন্দা করে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে বলেছেন, “ জনগণের ভোটে নির্বাচিত বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের নিশানা করা হচ্ছে। তাঁরা গ্রেপ্তারও হচ্ছেন। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআইয়ের অভিযোগ রয়েছে তাঁরা বিজেপিতে গিয়ে দিব্যি নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা গণতন্ত্রের উপর বিরাট আঘাত।”
(ছবিঃ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল 28 শে মার্চ পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠানোর পরে রাউজ অ্যাভিনিউ আদালত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। ঋণ- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)