
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ফের বোমা বিস্ফোরণ মুর্শিদাবাদে। এবার খোদ লালবাগ শহরে। শুক্রবার বিকেল পাঁচটা পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ পল্লি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। বোমা বিস্ফোরণে আহত মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি মাসুদ শেখ নামে এক ব্যক্তি। বছর পঞ্চাশের মাসুদের বাড়িতেই বোমা বিস্ফোরণ হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। ওই বাড়িতে বোমা মজুত থাকার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ফরিদ বাড়িতে একাই ছিল না কি আরও কেউ তাঁর সঙ্গে ছিল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, বিস্ফোরণের পর তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ। মাসুদের বাড়িতে একাধিক ব্যক্তি থাকার দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশপ্রিত সিংহ বলেন, ” বিস্ফোরণ হলে একজন আহত হত না। অনেকেই আহত হত। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
বোমা বাঁধার পাকা কারিগর শিয়ালমারা এলাকার বাসিন্দা মাসুদ বছর ছয় সাত আগে লালবাগের রামকৃষ্ণ পল্লির নাকুড়তলায় থাকতে শুরু করে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। এদিন স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনে তাঁরা বেরিয়ে এসে দেখেন ফরিদের বাড়ি লাগোয়া পাঁচিল টপকে পালিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন যুবক। রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতেই কাতরাচ্ছে ফরিদ। বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বোমার মশলা। তবে কী কারণে ফরিদের বাড়িতে বোমা বাঁধার সরঞ্জাম ছিল তা আহতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।
সদ্য ফেলে আসা ডিসেম্বরের শুরুতে সাগরপাড়ায় বোমা বিস্ফোরণে তিন জনের মৃত্যু হয়। সেই বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল খুব বেশি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এদিন মুর্শিদাবাদ থানায় বোমা বিস্ফোরণের পর প্রশ্ন উঠছে “জেলায় এত বোমা কেন?” জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণ সাত দিনও যায় না, বোমা বিস্ফোরণ অথবা বোমা উদ্ধারের খবরে শিরোনামে উঠে আসে মুর্শিদাবাদ। ২০২৪-এর ডিসেম্বরের শেষে নিমতিতা স্টেশনে বোমা উদ্ধার হয়। সেখানেও নাশকতার ছক কষেছিল দুষ্কৃতিরা, দাবি পুলিশের। যদিও স্থানীয় মানুষজন দুই দুষ্কৃতিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ায় সে যাত্রায় বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছিল।
মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ দাবি করেন, ” বারুদ স্তুপে রয়েছে জেলা। এখানে পুলিশকে কাজ করতে দেওয়া হয় না।” মুর্শিদাবাদ শহর কংগ্রেসের সভাপতি অর্ণব রায় বলেন ” তৃণমূলের সর্বক্ষণের কর্মীর বাড়িতেই বিস্ফোরণ হয়েছে। আগে বিহার, উত্তরপ্রদেশকে দুষ্কৃতিরাজের সঙ্গে তুলনা করা হত এখন বাংলায় সেই রাজত্ব চলছে।” লালবাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশপ্রিত সিংহ বলেন, ” পুলিশ সক্রিয় বলেই বোমা উদ্ধার হচ্ছে।উদ্ধার না হলে বলতেন পুলিশ কাজ করে না।” মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, ” ওই ওয়ার্ডে তো বিজেপি জিতেছে। সেখানেই বোমা বাঁধার কাজ চলছিল। কেন চলছিল তার দায় তো ওরাও এড়িয়ে যেতে পারে না।”