সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সরকারের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জমি বাড়ি মিউটেশনের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের পুরসভা থেকে কর্পোরেশন সর্বত্র। সেক্ষেত্রেও এবার সুরাহা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন জমি বাড়ির মালিকরা। আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানির সম্ভাবনা আছে।
গোটা রাজ্যেই ফ্ল্যাট বা বাড়ির মিউটেশনের জন্য ২০০ টাকা এবং প্রসেসিং ফি ১০০ টাকা নেওয়ার কথা পুরসভা গুলির।
জীবিকা বা উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ নিতে মানুষ ঠিকানা বদলাচ্ছে গ্রাম থেকে নগরে। সেই চাহিদায় তাল মিলিয়ে দ্রুত রাজ্যের ছোট- বড় শহরগুলিতে গড়ে উঠছে বহুতল আবাসান। সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে পুরসভাও। এইসব বহুতলের ফ্ল্যাট বা বাড়ি মিউটেশন করে দিতে পুরসভা গুলি নির্দিষ্ট ফি ছাড়াও অতিরিক্ত লক্ষ লক্ষ টাকা নাগরিকদের কাছ থেকে আদায় করছে বলে অভিযোগ। অথচ রাজ্য সরকার বারংবার নোটিশ জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, এইভাবে সার্ভিস চার্জের নামে মিউটেশন করার বিনিময় কোন বাড়তি টাকা পুরসভা গুলি নিতে পারবে না। কিন্তু কে শোনে কার কথা! এই পরিস্থিতিতেই বিধাননগর পুর নিগমের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন একটি অভিজাত বহুতলের আবাসিকরা।
গোটা রাজ্যেই ফ্ল্যাট বা বাড়ির মিউটেশনের জন্য ২০০ টাকা এবং প্রসেসিং ফি ১০০ টাকা নেওয়ার কথা পুরসভা গুলির। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে নিউ টাউনে মার্লিন ফিফ্থ এভিনিউ নামে একটি আবাসনে বাসিন্দারা বসবাস শুরু করেন। তারা বিধাননগর পুরনিগমের কাছে মিউটেশন করার জন্য আবেদন করেন। পুরসভা জানিয়ে দেয়, দলিলে ফ্ল্যাটের দামের ওপর ০. ৮% হারে সার্ভিস চার্জ নেওয়া হবে প্রতিটি মিউটেশনের জন্য। সেখানকার বাসিন্দা নবীন আগারওয়াল সহ ৩৩ জন আবাসিক কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন। নবীন বাবু প্রায় দেড় কোটি টাকা দিয়ে ওই আবাসনে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেক্ষেত্রে পুরসভার দাবি অনুযায়ী তাকে মিউটেশন করানোর জন্য ৩০০ টাকার সঙ্গেই আরো দেড় লক্ষ টাকা দিতে হবে। যা একেবারেই বেআইনি বলে অভিযোগ মামলাকারীদের।
এই মামলার আরেক অংশীদার কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, রাজ্য সরকার ২০১৫ ও ২০২২ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সব পুরসভাকে জানিয়ে দেয়, অর্থ দপ্তরের রুল ১২১ ধারা অনুযায়ী, কোনও পুরসভা মিউটেশন করার জন্য বাড়তি চার্জ নিতে পারবে না। কিন্তু তার অভিজ্ঞতা, একমাত্র কলকাতা কর্পোরেশন ছাড়া বিভিন্ন পুরসভায় নিজের নিজের মতো করে সার্ভিস চার্জ বাবদ একটা মোটা টাকা হাতিয়ে দিচ্ছে নাগরিকদের থেকে। এর বিরুদ্ধে একাধিকবার হাইকোর্টও নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তারপরেও এই পকেট কাটা চলছে বলে অভিযোগ ওই ভুক্তভোগী আইনজীবীর।