বছর কুড়ির বেশি সময় ধরে চলা এই মামলায় মাঝখানে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুরসভা সেই ভরাট জমিকে ফের পুকুরে পরিণত করে দেয়।

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আইনকে ফাঁকি দিয়ে জলাশয় হয়ে গিয়েছিল ভিটে জমি। আর এখন চাষের জমিতে জল ঢেলে নকল পুকুর বানানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন সেই একই মালিক। এই অভিযোগ শুনে তাজ্জব এলাকাবাসী শুধু নয় কলকাতা হাইকোর্টও।
ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর পুরসভার মধুপুর মৌজায়। ওই এলাকায় তপন সোম নামে এক ব্যক্তির প্রায় এক বিঘা একটি পুকুর ছিল। সেই পুকুরকে তিনি মাটি ফেলে ধিরে ধিরে ভরাট করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল মধুপুরবাসীর কাছ থেকেই। কিন্তু আইনকে ফাঁকি দিয়ে ততদিনে জলাশয়কে ভিটে জমিতে পরিণত করার যাবতীয় কাজ তিনি সেরে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ। তবু শেষতক আইনকে ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। বছর কুড়ির বেশি সময় ধরে চলা এই মামলায় মাঝখানে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুরসভা সেই ভরাট জমিকে ফের পুকুরে পরিণত করে দেয়।
হেরে যান মালিক। কিন্তু নাছোড় মালিক শর্ত সাপেক্ষে সমপরিমাণ একটি পুকুর একই মৌজায় তৈরি করে দেবেন বলে আদালতকে জানিয়ে দেন। এখন অভিযোগ, একই মৌজাতে তো নয়ই, ওই ব্যক্তি নতুন পুকুর তৈরি করেছেন ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কাশিমবাজারে। তাও সেটা কোনও পুকুর নয়। আয়তনেও মধুপুরের পুকুর থেকে ছোট একটি নিচুভূমি। সেখানে দৈনিক পাম্প বসিয়ে নকল পুকুর তৈরির মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। অথচ তাঁর সেই পুকুর তৈরির কথা ছিল বিষ্ণুপুর মৌজায়।
সম্পতি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে বিষয়টির শুনানি হয়। বিচারপতি সব দেখেশুনে উভয় পক্ষের কথায় ভরসা না রেখে ফয়সালার জন্য পুরসভা থেকে ভূমি দফতর সকলকে আবার সরেজমিনে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে নির্দেশ দিয়েছেন চলতি মাসের ন’ তারিখ। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবি অরিন্দম দাস বলেন, ” জানুয়ারির ১৫ তারিখ অভিযোগের খতিয়ে দেখতে সব পক্ষের একটি প্রতিনিধি দল এলাকা পরিদর্শনে যাবেন। তারা এসে যে রিপোর্ট জমা দেবেন তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আদালতের।”
অভিযোগকারীদের একজন পঙ্কজ মজুমদার বলেন, ” আদালতের নির্দেশ আসতেই মালিক ফের কাশিমবাজারের ওই নিচু জমিতে জল ঢেলে নকল পুকুর বানানোর চেষ্টা করছেন। আর তা করছেন প্রশাসনের একাংশের প্রচ্ছন্ন মদতেই।”