
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেনের গলা নকল করে নদিয়া থেকে বীরভূম সর্বত্র টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে মুর্শিদাবাদে। একদিন নয়, সৌমিকের দাবি, “মাস চারেক ধরে এই কাজ চালাচ্ছে প্রতারক।” অবশেষে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন বিধায়ক।
সৌমিকের অভিযোগ,” ঠাকুরপুকুর, তেহট্ট, নাকাশিপাড়া এমনকি আমাদের জেলার সহ সভাধিপতির কাছে আমার নাম করে বিভিন্ন থানার আধিকারিকদের আমার গলা নকল করে ফোন করত। পরে তাদের কাছ থেকে টাকা চাইত ওই প্রতারক।” ৮৯৬১৬২১২৯৩ এই নম্বর থেকে বিশ্বজিৎ দে নামে বড়ঞার খরজুনার বাসিন্দা বিধায়কের গলা নকল করে ফোন করলে সৌমিকের পরিচিত একাধিক পুলিশ আধিকারিকও প্রাথমিকভাবে ভরকে যেতেন বলে এদিন দাবি করেন সৌমিক। এর আগে জেলার এক প্রাক্তন পুলিশ সুপারের নাম ভাঙিয়েও ওই প্রতারক একাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন একই পদ্ধতিতে বলেও দাবি করেন সৌমিক।
স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা এমনকি জেলা স্তরে তৃণমূল নেতাদের নামে নানান উপায়ে টাকা তোলার অভিযোগ তোলেন বিরোধিরা। সেই অভিযোগের সবটাই যে সত্যি এমন নয়। কখনও কখনও নেতাদের ঘনিষ্ঠজনেরাও বিধায়ক, সাংসদের নাম ভাঙিয়ে টাকা নিয়ে পরোক্ষে সুবিধা পাইয়ে দেন। সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। চলতি মাসে মুর্শিদাবাদে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসেও তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ” সরকারি প্রকল্পের জন্য কেউ টাকা চাইলে এক টাকাও দেবেন না। কেউ টাকা চাইলে থানায় গিয়ে অভিযোগ করবেন। থানা অভিযোগ না নিলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন।”
একাধিক থানার আধিকারিক, জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে টাকা তোলায় তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় সাবধানি সৌমিক মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিতভাবে প্রতারণার কথা জানিয়েছেন। ইসলামপুর থানা থেকে জেলা সাইবার থানা সর্বত্র প্রতারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিধায়ক বলেন, ” প্রতারককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।”
বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের দৌলতে অন্য ব্যক্তির গলা নকল করা সহজ হয়েছে। বেড়েছে সাইবার অপরাধও। যত দিন যাচ্ছে তত শক্তিশালী হচ্ছে ডিজিটাল ফাঁদ। গলা নকল করে পরিচিত জনের কাছ থেকে টাকা চাওয়া থেকে ব্ল্যাকমেল সব কিছুই হয়ে যাচ্ছে চোখের নিমিষে। এই কারণে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেও নাগাড়ে যেমন সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে তেমনি স্থানীয় থানাও যথেষ্ট প্রচার চালায় এই ধরনের প্রতারকদের পাতা ফাঁদে পা না দিতে। সৌমিকের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটেছে বলে অনুমান জেলার এক পুলিশ কর্তার।