সংবাদ প্রতিনিধি, বহরমপুরঃ কোথায় গিয়ে ছেদ পড়বে আরজিকর কান্ডের জেরে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন? এই প্রশ্নই এখন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যবাসীকে। শুক্রবারের নাগাড়ে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পথ আঁকড়ে পড়ে ছিলেন আন্দোলনকারীরা। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত সিবিআই শুক্রবার নিহত পড়ুয়া চিকিৎসকের পরিবারের লোকজনকে আরজিকর হাসপাতালে যেখানে তাঁরা অপেক্ষা করেছিলেন সেখানে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নিমাণ করিয়েছেন। অন্যদিকে রাজ্যজুড়ে নির্যাতিতার বিচার চেয়ে অব্যহত প্রতিবাদ।
সেই প্রতিবাদে নতুন সংযোজন প্রাক্তন শিক্ষক গোলাম মোস্তফা সরকার। কৃষ্ণনাথ কলেজের প্রাক্তনী গোলাম হরিহরপাড়া হাজি আলাম বক্স সিনিয়র মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। পরে ওই স্কুলেরই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক হয়েছিলেন। কংগ্রেস রাজনীতিতে বিশ্বাসী এই শিক্ষক ২০১৬ সালে তিনি রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন পুরস্কার পান। স্মৃতি স্মারক সহ সেদিন সাম্মানিক ২৫ হাজার টাকাও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। সেই স্মারক ও টাকা শুক্রবার জেলাশাসকের কাছে গিয়ে ফেরত দিয়ে এসেছেন। আরজিকর কান্ডই যে তাঁর পুরস্কার ফেরানোর মূল উদ্দেশ্য তাও তিনি এদিন স্পষ্ট করেছেন।
যাওয়ার আগে ধোপঘাটি এলাকায় কংগ্রেস সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ” একদিন যা আমাকে সম্মানিত করেছিল আর সেই পুরস্কার আমার কাছে কাঁটার মতো বিঁধছে। আরজিকর কান্ড আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানাতে তাই সরকারের দেওয়া সেই সম্মান আমি ফেরত দিতে চাই।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার রাজনৈতিক পরিচয় এই পুরস্কার ফেরত দেওয়ার কারণ নয়। আমি বিবেকের তাড়নায় এই পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছি।” যদিও তিনি পদে ওই শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি। প্রসঙ্গত, সেদিনের পুরস্কারের আর্থিক মূল্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে না নিয়ে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ডে দান করেছিলেন বলেও দাবি করেন।
শুধু তাই নয়, শিক্ষারত্ন বাছাইয়ের পদ্ধতি নিয়েও এদিন সরকারের সমালোচনা করেন গোলাম। তিনি বলেন, ” সরকার ঘুরে ঘুরে দেখে কাকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে তা ঠিক করবেন না তো নিজেরাই নিজেদের পুরস্কার পাওয়ার জন্য ফর্ম পূরণ করতে হয়। নিজে পুরস্কার পেয়েও বলছি এইভাবে শিক্ষারত্ন বাছাই হওয়ায় অনেক যোগ্য শিক্ষক এই পুরস্কার পান না।” এ রাজ্যের শুধুমাত্র চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানই নয়। যে কোনও প্রতিষ্ঠানেই পাঁক চক্র তৈরি হয়েছে জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, ” আগামী দিনে তিলোত্তমা কান্ড বহু ঘটবে। তাই সবাইকে সাবধান হতে এই আন্দোলনে শামিল হতে হবে। তিলোত্তমার মা বাবাও কল্পনা করেনি এই ঘটনা ঘটবে।
আরও পড়ুনঃ প্রয়াত অনল আবেদিন, শোকবার্তা অধীরের