
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ চিনা HMPV বা হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। বিশেষ করে কলকাতায় একজন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়ার পর রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রশাসনও নড়েছে। বহরমপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চারমাসের এক শিশুর শরীরেও এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল। দিন চারেক আগে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে। আপাতত সে সুস্থ আছে বলে জানান শিশুরোগ বিশেষ্জ্ঞ ভোলানাথ আইচ। তিনি বলেন, ” মূলত জন্মগত ত্রুটি আছে এমন শিশুর বিশেষ করে যাদের জন্মাবার পরে কাচের ঘরে রাখতে হয়। কিংবা ফুসফুস বা হৃদপিন্ডের সমস্যা রয়েছে এমন এক বছরের নিচে যাদের বয়স তাঁদের এই ভাইরাসে আক্রান্তের সম্ভাবনা বেশি।”
একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ” এই ভাইরাস মানবশরীর চেনে, ফি বছর আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় কোনও না কোনও ভাইরাস দ্বারা শিশু আক্রান্ত হয়। করোনার পর এসেছে অ্যাডিনো ভাইরাস। করোনা এসেছিল বাদুরের কাছ থেকে কিন্তু এই ভাইরাস মানুষের শরীর চেনে। তাই প্রতিরোধ করতে পারবে।” তবে চিনে এই ভাইরাসের যে প্রজাতি ধরা পড়েছে সেই প্রজাতিই ভারতে কি না তা এখনও গবেষণাস্তরে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই রোগে আক্রান্তদের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হবে বলেও জানান এই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। কোমর্বিটি আছে যে সমস্ত প্রবীণদের তাদেরও একই লক্ষণ রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে মুখে হাত দিয়ে কাশা ছাড়াও সর্দি কাশি হলে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পড়তে অনুরোধ করেছেন তিনি। বাইরে পোশাক ছেড়ে ঘরের শিশুকে কোলে নেওয়ার মতো বেশ কিছু সর্তকর্তা অবলম্বন করলে এই রোগ কম হবে বলেও পরামর্শ দিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
কলকাতায় যে শিশুর শরীরে HMVP ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে সে মুম্বইয়ের বাসিন্দা। ডিসেম্বরে কলকাতায় এসেছিল। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় তার হাঁচি, কাশির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁর শরীরে HMVP-র উপস্থিতি নিশ্চিত করার পর তার সপ্তাহ দুয়েক চিকিৎসা চলে। বর্তমানে সে সুস্থ হয়ে মুম্বই ফিরে গেছে বলেই খবর।
ভারতের বেঙ্গালুরুতে ৩ এবং ৮ মাসের ও আহমেদাবাদেও এক ২ মাসের শিশুর HMPV-তে আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে। বেঙ্গালুরুর স্বাস্থ্যমন্ত্রক স্পষ্ট বলেছে, এই ভাইরাসের সঙ্গে চিনের যোগ নেই। কলকাতার ঘটনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি নিশ্চিত না হলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সরকার ভাইরাসের মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমবার গঙ্গাসাগরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ” ‘‘HMPV নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর দরকার নেই। কোনও গাইডলাইন এলে রাজ্য সরকার তা মানবে।’’