বাবা ছেলের খুনের ঘটনায় জড়িত ইনজামুল হককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বুধবার রাত্রে

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ক্ষত এতটাই গভীরে যে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না রাজ্য প্রশাসন। আর তাই প্রলেপ দিতে প্ল্যান এ, প্ল্যান বি খাটাতে পিছপা হচ্ছেন না প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। আর তাই এলাকাবাসীর ক্ষোভ টের পেয়ে প্রথমে গণ্ডগোলের সময় শমসেরগঞ্জের দায়িত্বে থাকা সাব-ইন্সপেক্টর শিবপ্রসাদ ঘোষকে সরিয়ে অমিত ভকতকে ফিরিয়ে আনা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার তাঁকেও সরিয়ে দিয়ে ওই থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইসি পদমর্যাদার সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক সুব্রত ঘোষকে। সুব্রত ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের সার্কেল ইন্সপেক্টর। একইসঙ্গে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার আরও একটি উত্তেজিত এলাকা সুতি থানার ওসি সাব-ইন্সপেক্টর বিজন রায়কেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর পরিবর্তে ওই থানাতে আইসি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক সুপ্রিয় মাজিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রোমশনের আগে সুপ্রীয় লালগোলা থানার ওসি ছিলেন।পরে তাঁকে পূর্ব বর্ধমানের ট্রাফিক গার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল মুর্শিদাবাদের সুতি, শমসেরগঞ্জ। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা থেকে, ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা, এমনকি মানুষ খুনের মতো ঘটনা শুনে শিহরিত হয়েছে বাকি বিশ্ব। এখনও ঘরছাড়া অনেকে। রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) বৃহস্পতিবার বিকেলে অবশ্য দাবি করেছেন, ” শমসেরগঞ্জে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে।” তিনি এটাও বলেন, ” সব দোকানপাট এখনও খোলা নেই। সেগুলিও তাড়াতাড়ি খুলে যাবে।”
তিনি বলেন, ” হিংসার ঘটনায় ৬০টি এফআইআর করা হয়েছে। সেই মামলায় ২৭৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ ওয়াকার রেজার নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে ১১ সদস্যের সিট। ঘটনাস্থলে তিনি শিবির করে আছেন। গুরুত্ব দিয়ে সব তদন্ত করা হচ্ছে।” বাবা ছেলের খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও রাজ্য পুলিশের এই শীর্ষ কর্তা দাবি করেন।
তিনি বলেন, ” এই খুনের ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী ইনজামুল হককে বুধবার রাত্রে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ সুতি থেকে গ্রেফতার করেছে।” ইনজামুল জাফরাবাদের নিহতদের প্রতিবেশী শুলি পাড়ার বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার পর থেকে সে পালিয়ে গিয়েছিল। সুপ্রতীম বলেন, ” এই ঘটনার যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিল ইনজামুল তাঁদের অন্যতম। শুধু নেতৃত্ব দেওয়াই নয়, তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ যাতে না পাওয়া যায়, তারজন্য সে সব ক্যামেরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল এই ইনজামুল।”
দোষীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। নৃশংস খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষদের খুঁজে বার করে জড়িতদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন এডিজি। যদিও বেদবোনা, জাফরাবাদ,রানিপুর, ধুলিয়ান পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড ঘোষপাড়া ও শমসেরগঞ্জ থানা এলাকার মানুষ এখনও ভীত, এখনও সন্ত্রস্ত। সুতি ও শমসেরগঞ্জে এখনও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহনীরও।