জেলায় মহিলা কমিশন, দিলীপের বিয়েতে ‘উদ্বিগ্ন’ নেতারা

Social Share
ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলছেন মহিলা কমিশনের সদস্যরা। পাশে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের অস্থির আবহে ঘর বাঁধলেন বিজেপি’র ‘দামাল ছেলে’ দিলীপ ঘোষ। তাঁরই সহযোদ্ধা রিঙ্কু মজুমদার তাঁর ঘরণী। ছাঁদনাতলায় যখন দিলীপ আর রিঙ্কু ঘর বাঁধতে চলেছেন, তার কিছুক্ষণ আগে বহরমপুর সার্কিট হাউস ছুঁয়ে সোজা মালদহের কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের পৌঁছে গিয়েছেন মহিলা কমিশনের সদস্যরা। সেখানকার পারলাল্পুর স্কুলে শমসেরগঞ্জের হিংসার ঘটনায় ভিটে মাটি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন ওই এলাকার মানুষজনের একটা বড় অংশ। সকালে সেখানে পৌঁছেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরাও। রাজ্যের বিজেপি নেতারা এই ঘর ছাড়াদের জন্য ‘উদ্বিগ্ন’ বলে দিনরাত দাবি করছেন।

বিজেপি’র “উদ্বিগ্ন” নেতারা অবশ্য সেই সময় মুর্শিদাবাদেই নেই। তাঁরা গিয়েছেন দিলীপ ঘোষের বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে। বিজেপি’র বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি মলয় মহাজন বলেন, ” একটা বৈঠক ছিল, সেখানেই এসেছি। বৈঠক থেকে ওখানে যেতে পারি।” জঙ্গিপুর সংগঠনের নেতা সুবল চন্দ্র মণ্ডলও বলেন ” আমরা দু’জন এসেছি। বৈঠক শেষে যেতে পারি।”

নব দম্পত্তিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন বহরমপুরের সভাপতি মলয় মহাজন

শমসেরগঞ্জের ঘটনা কতটা সত্যি, কতটা ভুয়ো তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতেই রাজ্যে এসেছেন বলে জানান কমিশনের সদস্যরা। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রোহতকার জানান তিনি সবার সঙ্গেই কথা বলবেন। মহিলাদের জন্য সর্বোপরি ঘরছাড়াদের জন্য সরকার থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সরকারের মতও তাঁরা শুনবেন বলে জানিয়েছেন।

কমিশনের আর এক সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন ” আমরা হিংসা কবলিত শমসেরগঞ্জেও যাব। সেখানকার ক্ষতিগ্রস্থদের সঙ্গে কথা বলব। কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাও দেখে আসব।” বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ” এই তদন্ত যেন নিরপেক্ষ হয়, কারও পক্ষ নিয়ে রিপোর্ট যেন না দেওয়া হয়। আমরা সাধারণত দেখি কেন্দ্রের মহিলা কমিশন কেন্দ্র সরকারের পক্ষে আর রাজ্যের মহিলা কমিশন রাজ্যের পক্ষে রিপোর্ট দেয়। সেটা যেন না হয় এটুকুই বলব।” সুবল বলেন, ” কাল থাকব শমসেরগঞ্জে।”

বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ঘরছাড়াদের একটা অংশকে ভবানী ভবনে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্র ত্রাণ নিয়ে ছুটে গিয়েছেন বৈষ্ণবনগর বিধানসভায়, যেখানে শমসেরগঞ্জ বিধানসভার ঘরছাড়ারা আশ্রিত। সেই ঘর ছাড়ারাই বলছেন, পারলালপুর স্কুল ছাড়ার জন্য পুলিশ ও সাধারণ প্রশাসন তাঁদের জোর করছে। কে শুনবে তাঁদের কথা তেমন কাউকে ওদের বিশ্বাস হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন আশ্রিতরা।

বিজেপির তাবড় রাজ্য নেতারা আজ অবশ্য ব্যস্ত দিলীপ ঘোষকে শুভেচ্ছা জানাতে। তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন সকালে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দিলীপ ঘোষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপহারও পাঠিয়েছেন। তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষকে। মুর্শিদাবাদের আমন্ত্রিত বিজেপি নেতারা অবশ্য ফুল দিয়েই শুভেচ্ছা জানাবেন দিলীপকে। মলয় বলেন, ” একজন প্রচারক তো ফুলেই সন্তুষ্ট। আলাদা করে উপহার লাগে না কি?”

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী মনে করেন বিয়ে ব্যাক্তিগত ব্যাপার, ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়। উভয়েরই ভালো হোক সেই কামনাও করেছেন। তবে দিলীপ ঘোষকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপহার পাঠানো প্রসঙ্গে তিনি মনে করেন ” বিজেপি’র অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে নাটক করছেন তিনি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights