প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি পড়ানো হলে ক্ষতি হবে জুনিয়র হাইস্কুলের, দাবি একাংশ শিক্ষকদের

Social Share

সংবাদ প্রতিনিধি, মুর্শিদাবাদঃ জেলার ৪৮৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পড়ানোর মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো আছে। আগামী শিক্ষাবর্ষেই ওই স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণিও পড়তে পারবে পড়ুয়ারা। লিখিত আকারে এই প্রস্তাব প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে পাঠানো হয়েছে বলে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান আশিস মার্জিত জানিয়েছেন। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক অপর্ণা মন্ডল বলেন, ” আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেই প্রস্তাব বোর্ডকে পাঠিয়েছি। এখনও বোর্ড থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি।” সেই নির্দেশ এলে ২০২৫ সালেই তা কার্যকর হবে। সূত্রের দাবি, ২০২৬ ও তার পরবর্তী সময়ে প্রায় সব প্রাথমিকেই শুরু হবে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন।

মুর্শিদাবাদ জেলায় ২৬টি ব্লকে মোট তিন হাজার ১৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসএসকে, এমএসকে আছে আরও এক হাজার ৫১০টি। তারমধ্যে বেশ কতকগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। ধুঁকছে প্রাথমিক স্কুলও। এই অবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি চালু হলে শিক্ষার মান বাড়বে না কি স্কুল বাঁচবে তাই নিয়ে শিক্ষক মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

প্রশ্ন উঠছে, এখন জুনিয়র হাইস্কুলগুলোতে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ান হয়। তার মধ্যে অনেক স্কুলের একটা ভাগে আছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রস্তাবে সেই সমস্ত স্কুলেরও নাম আছে। কিন্তু সেই সব স্কুলে প্রাথমিক বিভাগে পঞ্চম শ্রেণি পড়ানো হলে জুনিয়র হাইস্কুলে কোনও পড়ুয়া ভর্তি হবে না। তখন সেগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড় হবে বলে মনে করেন নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সহ সম্পাদক সুশোভন খান। তিনি অভিযোগ করেন, “আমাদের সংগঠন কেন জেলায় যতজন বিদ্যালয় পরিদর্শক আছেন তাঁদের সঙ্গেও বিষয়টি আলোচনা না করে বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।”

যদিও পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি পার্থ সরকার বলেন ” বিষয়টি তেমন নয়। সরকার আস্তে আস্তে অনেক কিছুই পরিবর্তন করছে। আপনারা জানেন অনেক স্কুলে একসময় মাধ্যমিক পড়ানো হত। সেগুলিতে এখন উচ্চমাধ্যমিক পড়ানো হয়। তেমনি অনেক জুনিয়র হাইস্কুলকে মাধ্যমিক স্কুলে পরিণত করা হয়েছে। আগামীদিনে বাকিগুলোও মাধ্যমিক স্কুলে উন্নিত হবে।”

হাজার তিনেক প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে প্রায় ২৫০টির কাছাকাছি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা তিরিশের নিচে। সেই স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এখনও বহু স্কুলে পড়ুয়া আছে, তো শিক্ষক নেই। কোথাও কোথাও একজন শিক্ষকই ভরসা প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে একজন শিক্ষকই প্রধান শিক্ষক, তিনিই আবার গ্রুপ ডি। তাহলে বছর খানেকের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার এই মানচিত্র কোন জাদুবলে কীভাবে বদলাবে? প্রশ্ন তোলেন সুশোভন। পার্থ অবশ্য বলেন, “ততদিনে সরকার শিক্ষক নিয়োগ করে ফেলবে। এবং নতুন কোনও পরিকল্পনায় নতুনভাবে সাজানোও হবে প্রাথমিক শিক্ষার পরিকাঠামো।”

আরও পড়ুনঃ এক বছরে পুলিশ সমবায়ের লাভ ৮০ লক্ষাধিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights