বর্তমানে শহরে আলোর ঝলকানি বেড়েছে অনেক

Social Share
বাসস্ট্যান্ড ইয়ংস কর্ণারের পুজো এখন স্থায়ী মন্ডপে হয়

অনিন্দিতা দেবঘোষঃ আলোর মালায় সেজেছে শহর। কানা গলি থেকে রাজপথ, কুঁড়ে ঘর থেকে হাইরাইজ আলোর ছটায় সেজেছে সবাই। দীপাবলী বাঙালীর প্রাণের উৎসব কিনা সে নিয়ে তর্ক থাকতেই পারে কিন্তু আনন্দের উৎসব তো বটেই। যে চত্বরগুলো দুর্গাপুজোর সময় মুখ গুঁজে শুধুমাত্র স্ট্রিট লাইটের আলোয় রাত গুজরান করে সেই চত্ত্বর গুলোই হঠাৎ করে জাদুকাঠির ছোঁয়ায় নতুন হয়ে ওঠে। আলতো শীতের পরশ আর হিম ঝরানো সন্ধ্যাগুলো হাসিমুখে স্বাগত জানায় শহরবাসীকে।

কল্পনা সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকার কালী পুজো

উন্নয়নশীল নাগরিক জীবনে ঝাঁ চকচকে রাস্তা আর উঁচু উঁচু বাড়ির পাশাপাশি কালীপুজোর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে চলেছে বহরমপুরে। যে পুজোগুলো কোনোটাই এলেবেলে পুজো নয় জৌলুসে সমান ভাবে উজ্জ্বল নামী দামী পুজোগুলোর সঙ্গে। চল্লিশ পঞ্চাশ বছর আগে শুরু হওয়া বেশ কিছু পুজো আজও স্বমহিমায় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু শহরবাসীর। তারমধ্যে হারিয়েও গিয়েছে অনেক পুজো।

লালদিঘি পাড়ার কালীপুজোর এবারের মন্ডপ

প্রতিটি শহরের পুজোর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। তেমনি এই শহরের বেশ কিছু পুজো ব্যক্তির নামে পরিচিত। যেমন অধীর কালী, লখা কালী, সুদীপ কালী, সুব্রত কালী, সত্যেন কালী ইত্যাদি। এর মধ্যে সুব্রত কালীপুজো বিগত বেশ কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পুজোর উদ্যোক্তা মন্ত্রী সুব্রত সাহা আজ আর বেঁচে নেই । কিন্তু তাঁর মৃত্যুর আগেই এই পুজোতে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল না। অথচ একটা সময় রমরমিয়ে এই পুজো হত অধুনা জেলা প্রশাসনিক ভবনের ঠিক বিপরীত দিকে। এই পুজো টেক্কা দিতো শহরের অন্য অনেক পুজোকে।

ফৌজদারী কোর্ট চত্বরের প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দিরের প্রতিমা

বর্তমানে আলোর ঝলকানি বেড়েছে অনেক কিন্তু বন্ধ হয়ে যাওয়া এই যে পুজোর কথা বললাম সেখানে আলোর রোশনাই ফুটতো তিন বা চারদিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে। গান, আবৃত্তি এমনকি অন্ত্যাক্ষরী প্রতিযোগিতা পর্যন্ত হতো। আর তার সঙ্গে বিভিন্ন রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শহরবাসীর আত্মার যোগ ছিল সেই পুজো। অনেক নতুনের ভিড়েও মাঝেমধ্যে মনে পড়ে যায় এই পুজোর একটা খোলামেলা পরিবেশ আর পাশের বিরাট মঞ্চের অনুষ্ঠানগুলো।

শাস্ত্রী স্মৃতি সংঘের এ বছরের প্রতিমা। এই পুজো প্রয়াত রাজনীতিক সত্যেন চৌধুরীর পুজো নামে পরিচিত।

পরবর্তীতে একদম বন্ধের মুখে স্থানীয় ছোটো কয়েকজন ব্যবসায়ী লকডাউনে আগে পরে বছর তিনেক এই পুজোটা চালান। তাঁদেরই একজন ইসমাইল শেখ জানান যেহেতু এই চত্বরের আশেপাশে কোনও বড় দোকান বা লোকালয় একদমই নেই তাই তাঁদের ইচ্ছে থাকলেও অর্থাভাবে এই পুজোটা চালিয়ে যাওয়া আর সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তো এই জায়গাটা সরকারী জমি হিসেবে খাঁচায় বন্দী। সময়ের তালে তাল মিলিয়ে হারিয়ে গিয়েছে আমাদের সেই মন কেমনের পুজো, মনে হয় ফাঁকে পড়ল নতুন প্রজন্ম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights