সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ভুয়ো ফেসবুক প্রোফাইল তৈরি করে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা আখছার ঘটছে। সে তসলিমা নাসরিনই হোক কিংবা সাধারণ মানুষ। সেই তালিকায় এবার নতুন সংযোজন সিপিএম নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে। আর তা নিয়ে ফের রাজনৈতিক বাদানুবাদ শুরু হয়েছে ভার্চুয়াল থেকে রিয়াল সর্বত্র।

শনিবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মিনাক্ষী (মীনাক্ষী মুখার্জী) মুখোপাধ্যায়ের নাম লেখা একটি ফেসবুক আইডি-র স্ক্রিনশট শেয়ার করেন তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ। সেখানে তিনি লেখেন, ” ছিঃ মীনাক্ষী। তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম সিপিএমের রাজনৈতিক শত্রু হতে পারেন। কিন্তু তার ছবি বিকৃত করতে গিয়ে দাড়ি, বোতল, মুসলিম সমাজ, মসজিদের ছবি এনে অসম্মান, কুরুচির এই প্রতিফলন ধিক্কারযোগ্য। এই পোস্ট অবিলম্বে ডিলিট করে ক্ষমা চাওয়া উচিত। রাজনীতিতে পেরে না উঠলেই এমন বিকৃতি আসে। এই প্ররোচনামূলকভাবে কোনো ধর্মকে অপমান করা ঘোরতর অন্যায়। তবে, সিপিএম তো, এরকমই মানসিকতা স্বাভাবিক।”
যদিও এই ছবি সমাজমাধ্যমে শুক্রবার থেকেই ভাইরাল। তবে কুনাল ঘোষের মতো একজন বর্ষিয়ান সাংবাদিক এই ছবি যখন রি-পোস্ট করেন নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তখন তা অনেকেই প্রশ্নাতীত ধরে নেন। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
ঘটনাটি সামনে আসতেই ঘটনার নিন্দায় নামে সিপিএম। দলের পক্ষ থেকে মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের অফিসিয়াল পেজের লিঙ্ক দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, ” এই দুটো সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল (ফেসবুক) ছাড়া কমরেড মিনাক্ষী মুখার্জীর আর কোনো নিজস্ব ফেসবুক একাউন্ট বা পেজ নেই। এর ব্যাতিরেকে মিনাক্ষী মুখার্জী অথবা মীনাক্ষী মুখার্জী নাম লেখা মানেই তিনি উনি নন। সেখান থেকে হওয়া কোনো পোস্ট, বার্তা, কন্টেন্টে ব্যক্তি মিনাক্ষী মুখার্জী কোনোভাবেই অবগত নয়।”


এই দুটি মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের আসল ফেসবুক আইডি বলে জানিয়েছে সিপিএম।
দলের নেতারাও নিজেদের পেজে অথবা অ্যাকাউন্টে ঘটনার নিন্দা করে একই কথা লেখেন। মুর্শিদাবাদের ডিওয়াইএফের সভাপতি নুরুল হাসান এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন ” কুনাল দা এই পোস্ট মিনাক্ষী মুখার্জীর নিজস্ব একাউন্ট থেকে নয়। এটা আপনিও ভালো ভাবে জানেন। এটা ফেক আইডি। এটা তৃণমূল এবং বিজেপির আইটি সেল যৌথ হবে এই অপপ্রচার করছে। আপনাদের তীব্র ধিক্কার জানাই।”
ফোনে মিনাক্ষী বলেন, ” কুনাল বাবু কী নিশ্চিত এই ফেসবুক প্রোফাইল সম্পর্কে? আসলে এগুলো ওঁদের (তৃণমূল) কাছে জলভাত। আমাদের রাজনীতি এই কাজ করতে শেখায় না। এগুলো ওঁরা প্রচার করেন। বাংলা খুব বিপদের মধ্যে আছে। নির্যাতিতার বিচার চেয়ে পথে নেমেছে রাজ্যের মানুষ। এখন এই সব প্রচার করে ওরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।”

তবে কুনাল ঘোষ যে না জেনে বুঝে এমন ফেক আইডি স্ক্রিন শট শেয়ার করেছেন এমন সহজ সিদ্ধান্ত অনেকেই মানতে চাইছেন না। সিপিএমের একাধিক নেতার দাবি, কুনাল বাবু তাঁর প্রোফাইল থেকে একাধিকবার সিপিএমের সমালোচনায় একাধিক পোস্ট করেছেন। ‘ডানা’র সময় রেড ভলান্টিয়ার্সের প্রচার নিয়েও কুনাল লেখেন, ” রেড ভলেন্টিয়ার বলে কিছু হয় না। ওটা প্রত্যাখ্যাত দলের ভেসে থাকার ছদ্মনাম। ( এবার শুরু…)”
সন্দেহ দানা বাঁধে তার পোস্টের শেষ দুটি শব্দে। অর্থাৎ তাঁর এই লেখা পরে সিপিএম সমর্থক অথবা নেতারা পাল্টা কমেন্ট করবেন বোঝাতেই তিনি লিখেছেন “এবার শুরু…”। সেই একই কারণেই কী সঠিক তথ্য না জেনে কুনাল, মিনাক্ষীর নামে তৈরি হওয়া “ফেক আইডি” শেয়ার করলেন? প্রশ্ন তুলছেন ডিওয়াইএফ আই নেতারা। তবে তৃণমূলের প্রথম সারির এক নেতা ” তাঁর ব্যক্তিগত মত” বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। এক্ষেত্রে কুনালের সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুনঃ পুলিশের দ্বারস্থ মিনাক্ষী