বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ অধীর গড়ে লোকসভার ভরা মরশুমে শুভেন্দু অধিকারী বহরমপুরে এলেন ঠিকই কিন্তু সভা ভরালেন সদরের আশপাশের মানুষজন। খোদ বহরমপুর শহরের মানুষজন কি মুখ ফেরালেন? প্রশ্নটা ঘুরল রাধিকামোহন সেন রোড থেকে কাশিমবাজার হয়ে ইন্দ্রপ্রস্থ রেশমঘর পর্যন্ত। বিজেপি’র বহরমপুর সংগঠনের অন্যতম কার্যকর্তা মলয় মহাজন স্বীকার করলেন, তবে ঘুরপথে। বললেন, “আমরা গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরেছি। ভোট বাক্সে শহরের ভোটেই আমরা এগিয়ে আছি। এটাই আশার কথা গ্রাম এবার উঠে এসেছে শহরে। তার মানেই আমরা এগোচ্ছি।”
তবে টিপ্পনি কাটলেন বহরমপুরে বিজেপির সংগঠনের বেশ কয়েকজন চেনা মুখ। সঙ্গে এও জানালেন, ” নেতাদের বক্তব্যই বা মনে দাগ কাটল কৈ?” শাক দিয়ে মাছ ঢেকে মলয় বললেন, ” এবার লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন দলের ছোট বড় নেতা সবাই সভায় বক্তব্য রেখেছেন নিজের মতো করে। কেউ লিখে আনেন নি। সবাই মনের কথা বলেছেন।”
সকাল দেখলে বোঝা যায় দিন কেমন যাবে? শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরের প্রার্থী নির্মল সাহা ও মুর্শিদাবাদের প্রার্থী গৌরীশঙ্কর ঘোষের হয়ে নির্বাচনী প্রচার করতে বহরমপুরে এসেছিলেন। তাঁর সভার আয়োজন করেছিলেন দলের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতারা।
সভাস্থল ছিল, টেক্সটাইল কলেজ মোড়। বহরমপুরের বুকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সভা হবে। কিন্তু প্রচার কৈ। সকাল থেকে শহরের এদিক ওদিক টোটো মাইক বাজিয়ে জানানো হয়েছিল শুভেন্দু আসছেন। কিন্তু কোথায় ব্যানার কোথায় পোস্টার। যে বিজেপি তাঁদের আইটি সেল নিয়ে এত ঢক্কানিনাদ সেই ডিজিটাল মাধ্যমেই বা প্রচার কৈ। নিয়মমাফিক জনা কয়েক নেতা জানিয়েছিলেন শুভেন্দু আসছেন বিজয় সংকল্প সভায়। তার ফল মিলল সভায়। শুভেন্দুর বৈকালিক সভা ভরল অন্য বিধানসভার লোক দিয়ে।
কেউ কেউ দুয়ো দিলেন, “একে তো রমজান মাস তার উপর আবহাওয়ায় ছিল ঝড়ের পূর্বাভাস। তা না হলে মানুষজনকে দাঁড়ানোর জায়গা দিতে পারতাম না।” পাশে দাঁড়িয়ে ব্যঞ্জনা মেশানো হাসি হাসছিলেন পঞ্চায়েতের এক কার্যকর্তা? শুভেন্দু কি শুনলেন? না কি সভায় উপস্থিত মানুষজনদের দেখে বললেন “এটা তো সবে উদ্বোধন হল। আমি আরও দু’বার তো আসবোই। পয়লা বৈশাখের পর থেকে শুরু হবে ভোটের প্রচার। আসবেন জাতীয় স্তরের নেতারাও।” এটাও বললেন ” যাঁর কথা শোনার জন্য আপনারা অপেক্ষা করে থাকেন তাঁকেও আমরা বহরমপুরে আনবো ভোট প্রচারে।” প্রসঙ্গত একুশের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোট প্রচারে আসার কথা থাকলেও শেষ মুহুর্তে সেই সভা বাতিল হয়।