Murshidabad Congress: দলবদলুদের প্রার্থী নয়,দাবি

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ সাগরদিঘির নির্বাচন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখ পুড়িয়েছে বলে মনে করেন কংগ্রেসের নিচু তলার কর্মীরা। লোকসভা নির্বাচনে ফের সেই ভুল হোক চাইছেন না তাঁরা। তাঁরা চাইছেন বহরমপুর ছাড়া জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ আসন দুটিতে প্রার্থী হোক দলেরই কোন নেতা। যিনি তৃণমূল স্রোতে গা না ভাসিয়ে কংগ্রেসের পতাকার নিচেই আছেন এতকাল। আর তা নিয়ে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া।

লোকসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট হবে নাকি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গেই জোট করে এগোবে কংগ্রেস এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। যা নিয়ে নতুন করে সমস্যায় পড়েছেন বামফ্রন্ট ও রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা। রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে তাঁরা নির্বাচনে নামতে চাইছেন না, সে কথা স্পষ্ট করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর কথার উপর ভরসা করেই রাজ্যে নির্বাচনে জোটে যেতে চাইছেন মহ: সেলিমরাও। সেক্ষেত্রেও অধীরকে কোনরকম সবুজ সংকেত দেননি জয়রাম রমেশরা। বামফ্রন্টের দাবি কংগ্রেস তার অবস্থান পরিষ্কার না করলে জোটের পথে যাওয়া সম্ভব নয়।

উল্টোদিকে বামফ্রন্ট এগিয়ে না আসায় রাজ্য কংগ্রেস ৪২ টি আসনের একটি তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে এআইসিসি দপ্তর দাবি রাজ্য কংগ্রেসের। মোঃ সেলিমও বলেছেন তাদের প্রার্থী তালিকাও প্রস্তুত। দুপক্ষের এই দর কষাকষিতে ফাপরে পড়েছেন দুই দলের নিচু তলার কর্মীরা।

এআইসিসি কে পাঠানো তালিকায় দেখা যায় মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর আসনের জন্য একাধিক ব্যক্তির নাম পাঠানো হয়েছে। জঙ্গিপুর আসনে দীর্ঘদিনের কংগ্রেস কর্মী ও নেতা হাসানুজ্জামান বাপ্পার পাশাপাশি নাম রয়েছে বিড়ি মালিক শাজাহান বিশ্বাসেরও। জঙ্গিপুর কংগ্রেসের কর্মীদের অভিযোগ শাজাহানের পরিবার তৃণমূলের পরিবার। একদিকে যেমন তার ভাই ইমানী বিশ্বাস তৃণমূলের বিধায়ক, তেমনি জেলা পরিষদের সভাধিপতির রাবিয়া সুলতানা ও তাঁর আত্মীয়। নিচুতলার কংগ্রেস কর্মীদের অভিযোগ ভোটে জিতলে দলবদল করতে সময় নেবেন না তিনিও। তারা চাইছেন প্রার্থী করুক দল। জঙ্গিপুর কংগ্রেসের দাবি, বর্তমান সাংসদ ও বিধায়কদের গোষ্ঠী কোন দলের জেরে কংগ্রেস ভালো জায়গায় আছে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসেরই কোন নেতাকে প্রার্থী করলে দল তার সুফল পাবে।

মুর্শিদাবাদ আসনের ক্ষেত্রে প্রাক্তন জেলা পরিষদ সভাপতি মোশারফ হোসেনের নাম পাঠানো হয়েছে। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের জেলা পরিষদকে ভেঙে তৃণমূলের জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করার পেছনে অন্যতম মাথা ছিলেন এই মোশারফ ওরফে মধু, দাবি কংগ্রেসের নিচু তলার কর্মীদের। তাদের অভিযোগ তৃণমূলের সঙ্গে গোষ্ঠী বিবাদে জড়িয়ে পড়ে দলে একা হয়ে গিয়েছিলেন মধু। তাই মান বাঁচাতে একুশের ভোটের আগে কংগ্রেসে ফিরে আসেন। কংগ্রেসের টিকিটে সেবার বিধানসভা ভোটে লড়াই করলেও তৃণমূলের কাছে তিনি হেরে যান। তারপরে দলের কোন সক্রিয় কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায় না বলেই অভিযোগ কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীদের। এই ব্যক্তিকে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করলে দল কতটা লাভবান হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলেরই। যদিও সূত্রের দাবি বামেদের সঙ্গে জোট হলে এই আসন ছেড়ে দেবে কংগ্রেস আর তাহলে মান বাঁচবে বলে মনে করেন কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীরা।

এই অবস্থায় দল কি সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই তাকিয়ে আছেন তাঁরা। হাসানুজ্জামান অবশ্য বলেন “২২ বছর ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে ঘর করছি। নেতা হিসেবে অধীর চৌধুরীকেই আমি মনে করি তিনি যখন যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি যদি মনে করেন আমাকে প্রার্থী করবেন আমার তাতে কোন আপত্তি নেই তেমনি আমার জায়গায় অন্য কাউকে প্রার্থী করলেও আমার কোন আপত্তি নেই।”

জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস অবশ্য কংগ্রেসের নিচু তলার কর্মীদের এইরকম দাবি শোনেননি বলেই জানান। তিনি বলেন মাঠে-ঘাটে অনেক রকম আলোচনা হয়। কংগ্রেস দলে এইরকম কোন আলোচনা হয় না। অত্যন্ত সুশৃংখল একটি দল যখন যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হবে।” একাধিক সংবামাধ্যমে সম্ভাব্য তালিকা প্রকাশের খবর প্রকাশিত হলেও জয়ন্ত বলেন তাঁর কাছে তেমন কোনো খবর নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights