সংবাদ প্রতিনিধি, মুর্শিদাবাদঃ যত দিন গিয়েছে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের দিকে ঝোঁক বেড়েছে নওদা বিধানসভার মানুষের। লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ২০ হাজার ভোট কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর থেকে বেশি পেয়েছেন তৃণমূলের ইউসুফ পাঠান।
এই এলাকা থেকে পরপর চারবার বিধায়ক হয়েছেন আবু তাহের খান। ২০০১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ছিলেন কংগ্রেসের বিধায়ক। ২০১৯ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়েই প্রথমবার সাংসদ হন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে। দু’লক্ষ ২৬ হাজার ৪১৭ ভোটে সেবার হারিয়ে দেন কংগ্রেসের আবু হেনাকে। চলতি বছর এক লক্ষ ৬৪ হাজার ২১৫ ভোটে সিপিএমের মহম্মদ সেলিমকে হারিয়ে দিয়ে দ্বিতীয়বার সাংসদে যাওয়া নিশ্চিত করেছেন তাহের।
একদিকে জয়ের উদযাপন, অন্যদিকে একুশের প্রস্তুতি, এই দুইকে সামনে রেখে নওদার আমতলা কলেজ মাঠে বৃহস্পতিবার একটি জনসভার ডাক দিয়েছিলেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান শেখ ওরফে হাবিব। সম্পর্কে আবু তাহের খানের ভাগ্নে হাবিব। তাহেরের ছায়াতেই রাজনীতি তার, এমনটাই দাবি নওদার মানুষের। তিনি পদে নওদার ব্লক সভাপতিও। কিন্তু এখানকার বিধায়ক সাহিনা মমতাজের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল নয়। বিধায়ক উত্তরে হাঁটলে হাবিব হাঁটেন দক্ষিণে। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ওই সভায় বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠান হাজির থাকলেও ছিলেন না বিধায়ক। সভায় ভিড়ও হয়েছিল।

এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক হিসেবে জনসংযোগে কোনও ছেদ পড়েনি মুর্শিদাবাদের সাংসদ তাহেরের। আর তারই সুফল মিলেছে প্রত্যেক ভোটে। নিজে জিতেছেন একসময়। এখন ঘাসফুলের যে কেউ জেতে তাঁরই জোরে, দাবি ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের। এদিন তাহেরও বলেন, “আমাদের নাড়ির টান নওদার সঙ্গে। আমরা ছিলাম, আছি, থাকব।” ওই এলাকাতেই বাস করেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মোশারফ হোসেন ওরফে মধু। দিন কয়েক আগে তাঁর বাবা প্রয়াত হন।
রাজনীতির মঞ্চে এখন দুই শিবিরের একে অপরে অবস্থান করলেও সেদিন মোশারফের প্রয়াত বাবার শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন তাহের। সেই প্রসঙ্গেও তাহের বলেন, “এলাকার বয়স্ক মানুষ আমাদের অতি পরিচিত মধুর বাবা। সেই হিসেবেই শেষ সময়ে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলা। আমাদের এখানে এটাই সংস্কৃতি বলতে পারেন।” প্রসঙ্গত, আবু তাহের যখন তৃণমূল সভাপতি ছিলেন সেই সময় দল বিরোধী কাজের জন্য তৎকালীন জেলা পরিষদের সভাপতি মোশারফ হোসেনকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। সেটা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। পরে কংগ্রেসে ফেরেন মোশারফ।
অন্য অংশের অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, মামা সাংসদ হয়ে যাওয়ায় তাহেরকে টপকে এলাকা দখলে এখন এগিয়ে ভাগ্নে হাবিব।