সিপিএমের বারো জন সহ- সম্পাদকের কেউ নয় বহরমপুরের

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রঘুনাথগঞ্জে হওয়া জেলা সম্মেলনে জামির মোল্লাকে ভরসা করে ফের তাঁকে জেলা সম্পাদক করেছিল সিপিএম। একজনকে যোগ করে এবার এক ডজন সহ-সম্পাদক নিয়ে বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মন্ডলী ঘোষণা করলেন সত্য চন্দ্রের উত্তরাধিকারিরা। সাগরদিঘির রজব আলি মল্লিক হলেন সেই বারো তম ব্যক্তি। পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী, কৃষক নেতা রজব ২০১৬ সালে সাগরদিঘি বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে হেরে গিয়েছিলেন তৃণমূলের কাছে। দলের কাছে ভরসার মুখ রজব ছিলেন সিপিএমের জেলা মেন্টরদের প্রাথমিক পছন্দ। সেই পছন্দেই বৃহস্পতিবার সিলমোহর দিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এই টিমই ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবে জেলা সিপিএমকে।

তবে ডিওয়াইএফের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাসের নাম বারো নম্বরে যুক্ত হওয়ার কথা ভেসেছিল শহর বহরমপুরে। কিন্তু ভাসিয়ে দেওয়া ভেলায় চড়তে যে রাজি নন সিপিএমের মেন্টররা এদিন রজব আলিকে জেলা সম্পাদকমন্ডলীতে এনে সেই বার্তাই পাঠান হল নিচুস্তরে। সন্দীপন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য। সেই সন্দীপনের সম্পাদকমন্ডলীতে অন্তর্ভূক্তি নিয়ে দু-ভাগ সিপিএমের নেতারা।

একাংশের দাবি সন্দীপনকে জেলা সম্পাদকমন্ডলীতে সুযোগ দেওয়া হলে বার্তা যাবে সিপিএম, পার্টিতে অপেক্ষাকৃত তরুণদের প্রাধান্য দিচ্ছে। আর এক অংশের দাবি, দলীয় কর্মসূচিতে সন্দীপনের ভূমিকা নিয়ে। এই দ্বিতীয় প্রশ্নেই আটকে গিয়েছে সন্দীপনের সম্পাদকমন্ডলীতে প্রবেশের ছাড়পত্র।

একইসঙ্গে সিপিএমে সন্দীপন পক্ষের নেতাদের দাবি, ” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীতে বহরমপুরের কোনও প্রতিনিধি নেই। সন্দীপন সেই বদনাম ঘোচাতে পারত।” অতীতে বহরমপুরের ভূমিপুত্র শেখর সাহা (প্রয়াত) , নৃপেন চৌধুরী, তুষার দে’র মতো দোর্দন্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতারা জেলা চালিয়েছেন। কিন্তু এখন বহরমপুরে সিপিএমের নেতা নেই। দলের কর্মসূচি তেমনভাবে জন মানসে চোখে পড়ে না। সিপিএমের জেলা কমিটি কোনও কর্মসূচি আয়োজন করলে সেখানে ভিড় করেন বহরমপুরের যুবরা।

তামান্না খুনের প্রতিবাদেই হোক কিংবা কসবা কান্ডে কোনও পথসভা তো দূরের কথা দলীয় কর্মী সমর্থকদের একটা মিছিল পর্যন্ত শহর পরিক্রমা করেনি ডিওয়াইএফ কিংবা সিপিএমের বহরমপুর লোকাল কমিটির পতাকা তলে। সেখান থেকে কাকে সম্পাদক হিসেবে দল বেছে নেবে ? পাল্টা প্রশ্ন এসেছে সিপিএমের এক নেতার কাছ থেকে। এক ক্ষুব্ধ সিপিএম কর্মীর দাবি, “সদ্য ৯ জুলাই সাধারণ ধর্মঘটের দিন সকাল ছ’টা থেকে দলীয় পতাকা হাতে জেলার অন্যত্র নেতা কর্মীদের দেখা গেলেও বহরমপুরের নেতারা পথে নেমে মিছিল করেছেন সকাল দশটায়।”

এমনকি ওইদিন এক বেসরকারি ব্যঙ্কে গিয়ে হুজ্জতি করে ব্যঙ্ক বন্ধ করা হয়েছে বলে সিপিএমের যুবদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যুব দলে রাশ টানার বদলে আলগা হয়েছে সন্দীপনের হাত ধরেই, এমন পর্যবেক্ষণও সিপিএমের পোড় খাওয়া নেতাদের নজরে পড়েছে। সন্দীপনের সম্পাদকমন্ডলীতে ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে এসবই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এক প্রবীণ সিপিএম নেতা বলেন, ” এই ধরনের কথা ডানপন্থী দলে চলে, বামপন্থী দলে চলে না। একটি সুশৃঙ্খল দলে নিয়মকানুনের মধ্য দিয়েই নানান স্তরে নেতা নির্বাচিত হয়। মনগড়া নেতা নির্বাচন হয় না। সন্দীপনরা আমাদের দলের সম্পদ। আগামীদিনে তারাই সামনের সারিতে থাকবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights