
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দলের চেয়ে তাঁর জাত বড়, এমনই মন্তব্য করেছিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁর সেই মন্তব্যের জেরে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গত শুক্রবার শোকজ চিঠি ধরায় বিধায়ককে। সময়ের আগেই শোকজের লিখিত জবাব দিয়েছিলেন বিধায়কও। কিন্তু সেই জবাব কমিটিকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তাই মঙ্গলবার তাঁকে সশরীরে কমিটির সামনে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা যায়।
সংবাদমাধ্যমে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “হুমায়ুন এমন কিছু বারবার বলছে, যা দলের নীতি, আদর্শের পরিপন্থী। ও যা বলছে, ও যা বলেছে সেটা ওর ব্যক্তিগত জায়গা থেকে। কিন্তু এক জন বিধায়ক হয়ে এটা ও ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারে না।” তাঁকে দলের তরফে কড়া বার্তা দেওয়া হবে বলেও দলীয় সূত্রে জানা যায়। সেই নির্দেশ না মানলে তাঁকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতেও পিছপা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কদের বিধানসভা থেকে চ্যাংদোলা করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমে পাল্টা মন্তব্য করেছিলেন হুমায়ুন। তিন দিনের সময় সীমা বেঁধে শুভেন্দুকে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার না করলে রেজিনগরে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও পাল্টা হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ” আমার জাতিকে অপমান করবে আর আমি ছেড়ে দেব। মুর্শিদাবাদ যেতে দিন তারপর আমি দেখিয়ে দেব।”
যদিও বিজেপির বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি শাখারভ সরকারও দেরি করেননি প্রত্যুত্তর দিতে। হুঙ্কার ছেড়ে তিনি বলেছিলেন, ” একমাসের মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী রেজিনগরের উপর দিয়ে আসবেন নওদায়। আমি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে থাকব। বেলডাঙা, রেজিনগরের মধ্য দিয়েই আসবেন। বেলডাঙায় চা খাবেন। এটা মুর্শিদাবাদ বলে কী বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে না কি? উনি কী বলেছেন।” ২০১৯ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী হয়ে মুর্শিদাবাদ আসনে লোকসভায় লড়াই করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ ফিরিয়ে শাখারভ দাবি করেছিলেন, ” উনি পদ্মের কাঁটার জ্বালায় চলে গিয়েছেন ঘাসে এবার যাবেন হাতে।” সেই চ্যালেঞ্জ অবশ্য গ্রহণ করেছিলেন হুমায়ুন।
তবে হুমায়ুনকে শোকজের প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা উসকে দিয়ে বলেছিলেন, ” হুমায়ুন বন্দ্যোপাধ্যায় হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকজ করতেন না। তিনি মুসলমান বলেই শোকজ করেছেন। তা না হলে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতেন। সেটা নেননি।” সেই মন্তব্যকে অবশ্য গুরুত্ব দেননি হুমায়ুন।