বহরমপুরে তৃণমূল নেতা খুনের পিছনে দলেরই রাঘব বোয়াল !

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ খুনের ৪৮ ঘন্টা পরে নড়েচড়ে বসল পুলিশ। নাগাড়ে তল্লাশি ও তদন্ত চালিয়ে অবশেষে শুক্রবার একজনকে গ্রেফতার করল বহরমপুর থানার পুলিশ। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাজিদ ইকবাল খান বলেন, ” বুবাই দাস, রাধারঘাটেরই বাসিন্দা। তাঁকে প্রদীপ খুনে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে।” শুক্রবার সকালে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে জেরায় অসঙ্গতি মেলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে ওইদিন সিজিএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

লক্ষ্মী পুজোর দিন সকালে দুষ্কৃতিদের ছোড়া গুলিতে নিহত হন তৃণমূল নেতা প্রদীপ দত্ত। বাইকে করে যে দু’জন দুষ্কৃতি এসেছিলেন তাঁরা প্রদীপকে চিনতেন না। ধৃত বুবাই দাস, প্রদীপকে চিনতে সাহায্য করে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশের অনুমান, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক অজানা তথ্য উঠে আসবে। যা তদন্তে সুতো জুড়তে সাহায্য করবে।

এলাকা সূত্রে জানা যায় বুবাই তৃণমূলের কর্মী। তৃণমূলের মিছিল মিটিংয়ে তার সক্রিয় উপস্থিতির কথা জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ধৃতকে চিনতেন বহরমপুর জেলা পরিষদের সদস্য রাজীব হোসেনও। তিনি বলেন, ” যাঁকেই দেখবেন সেই তৃণমূল করে। তবে এরা নিজের পিঠ বাঁচানোর জন্য দলে নাম লিখিয়ে দলের নাম ডোবায়।” তাঁর আরও দাবি, ” নিহত প্রদীপও আমাদের দল করত। কিন্তু ২০২১ সালের পর থেকে দলের সঙ্গে আর তেমন কোনও যোগাযোগ তাঁর ছিল না।”

প্রদীপের মৃত্যুর পর থেকেই তৃণমূলের এক “রাঘব বোয়াল” নেতার যোগের কথা উঠে আসছে বিভিন্ন সূত্র মারফত। এমনকি বিরোধীদেরও ইঙ্গীত ওই নেতার দিকেই। ভাগীরথীর ওপার একসময় যা বামেদের ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল এখন তা তৃণমূলের দখলে। বর্তমানে ওই এলাকায় জমি মাফিয়াদের বাড় বাড়ন্ত। সেই এলাকা দখলের জন্য জমি মাফিয়াদেরও ওই এলাকায় নামিয়েছে শাসকদলের ওই নেতা। তার ফলেই প্রদীপকে খুন হতে হয়েছে বলে তৃণমূলেরই একটি অংশের দাবি।

ভাগীরথীর ওপারে বহরমপুরের ছ’টি পঞ্চায়েত। রাধারঘাট এক ও দুই, নিয়াল্লিশ পাড়া,সাহাজাদপুর, সাটুই আর রাঙামাটি চাঁদপাড়া। তারমধ্যে সাটুই আর রাঙামাটি চাঁদপাড়া বিজেপি’র বাকি চারটিই তৃণমূলের দখলে। সূত্রের দাবি, সেখানেই এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই।

রাজীবের অবশ্য যুক্তি, “পঞ্চায়েত নির্বাচন বাদ দিলে লোকসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখলেই বুঝবেন রাধারঘাট এলাকায় তৃণমূল সাংগঠনিকভাবে দূর্বল। এটা ঠিক আমাদের মিটিং-মিছিলে লোক হয়। কিন্তু তারা ভোটের জন্য আসে না। আসে শাসকদল বলে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে। তবে যারা এই রাঘব বোয়াল যোগের কথা রটাচ্ছে পুলিশকে তদন্ত করতে তারা বিভ্রান্ত করছে, তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে দলকে দূর্বল করতে।”

আরও পড়ুনঃ সিএবি নির্বাচনের জল মাপতে মুর্শিদাবাদে সৌরভ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights