
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ নওদা ফিরল সংবাদ শিরোনামে। বচসা থেকে হাতাহাতি। সেখান থেকে একপ্রকার রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিল নওদার পাটকেবাড়ি। রবিবার সন্ধ্যা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত চলে তাণ্ডব। রমজান মাসে দুটি সম্প্রদায়ের একাংশ মানুষের এহেন আচরণে উৎকণ্ঠায় রাত কাটাতে বাধ্য হন নওদাবাসী। অনেকের দাবি, এই তাণ্ডব চালাতে ব্যর্থ হয় নওদা থানার পুলিশ। যদিও পরে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সকাল থেকে যদিও থমথমে ছিল পাটকেবাড়ি এলাকা। রাত পর্যন্ত এলাকায় পুলিশের টহল চলে। স্বাভাবিক ছন্দে ফেরে নওদা।

এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। বহরমপুর থেকে সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেখানে গিয়ে তিনিও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা দেন। ঘটনা দুঃখজনক জানিয়ে অধীর বলেন, ” এখানকার মানুষ যুগযুগ ধরে নিজেদের মধ্যে ভাতৃত্ব, সম্প্রীতি সৌহার্দ্যের মধ্যে বাস করেন। একসঙ্গে তাঁরা ব্যবসা করেন। একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হলেও এলাকার সংখ্যাধিক্য মানুষ গণ্ডগোলের বিরোধিতা করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।” পুলিশের প্রশংসা করে এলাকার মানুষের উদ্দেশ্যে অধীর বলেন, ” আপনারা যেমন ছিলেন তেমন থাকুন। আপনারা ভাল না থাকলে আমরাও ভাল থাকবো না। আপনাদের সকলের জন্য শুভ কামনা থাকল।”
নওদা ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তথা শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান শেখও ভিডিও বার্তায় এলাকায় সম্প্রীতি বজায় রাখার কথা বলেন এলাকাবাসীকে। নিজের ফেসবুক পেজে সিপিএম নেতা সমীক মন্ডল লেখেন, ” বিকৃত মতাদর্শের শিকার এক মাতালের নোংরামির জন্য নিরীহ গরীব সবজি বিক্রেতার দোকান ভেঙে দিতে হবে, কোন ব্যবসায়ীর রুটিরুজির সংস্থানে আগুন দিতে হবে – এটাও নিজধর্মের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ নয়।
এই অসহিষ্ণুতা নিন্দনীয়। ধর্ম নিয়ে মানুষের এই বিভাজন আমাদের কোন লাভ দেবে? আসলে চাকরি নেই, ফসলের দাম নেই, শিক্ষার সুযোগ নেই, চিকিৎসার সুবিধা নেই – এইরকম দেশের লোকেরা ধর্ম নিয়ে মারামারি করলে যাদের সুবিধা হয় এইসব ঘটনায় তাদের হাতই শক্ত হয়। নওদার মানুষের প্রতি ভরসা আছে, এই প্ররোচনায় তারা পা দেবে না।” বিজেপির বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি শাখারভ সরকার এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ একাংশ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। পরে বলেন, ” ঘটনার কথা সংসদে তুলবেন আমাদের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিধানসভাতেও পাটকেবাড়ির কথা তুলেছেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখাও করবেন।” এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুজনেই নওদায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসবেন।”