হেমন্তে সংকটে আলুর রপ্তানি, বাড়তে পারে দাম

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সমস্যা যেন মিটছেন না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন আলুর ঊর্ধমুখী দাম নিয়ে। তারপরেই আলু ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের কৃষিজ বিপণন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বেচারাম মান্না। সকলের সম্মতিতে বেঁধে দেওয়া হল আলুর দাম। পাইকারি বাজারের ২৬ টাকা প্রতি কেজি আলু খোলা বাজারে বিকোবে ৩০ টা কেজি দরে।

কিন্তু তারপরে দেখা দিয়েছে অন্য সমস্যা। আলু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সীমান্তে আলু বোঝাই গাড়ি ফের আটকে দিচ্ছে পুলিশ। ফলে বাংলা থেকে আলু অন্য রাজ্যে আলু রপ্তানি করা যাচ্ছে না। ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। আর সেই সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজতে ও সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে শনিবার হুগলির তারকেশ্বরে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল ব্যবসায়ীদের সাথে হিমঘর মালিকদের একটি বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে দু-তরফেই পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় সোমবারের মধ্যে সরকার কোনও সিদ্ধান্ত না নিলে ওইদিন রাত থেকে হিমঘর থেকে আলু বের করবেন না ব্যবসায়ীরা। আর তা হলে মঙ্গলবার সকাল থেকে আনাজ বাজারে আলু না পাওয়ার সম্ভাবনাই জোরাল হয়েছে। যে আলু বাইরে থাকবে তাও চড়া দামে বিকোবে বলেই অনুমান খুচরো বিক্রেতাদের।

পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ” সরকার অলিখিতভাবে আলু রপ্তানি বন্ধ রেখেছে।” শুধু ভিন রাজ্যে যাওয়াই নয়, সমিতির অভিযোগ জেলা থেকে জেলাতে আলু যেতেও অসুবিধা হচ্ছে। আলু ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ” নাসিক থেকে পেঁয়াজ আনতে সরকারের অসুবিধা নেই কিন্তু আলু রপ্তানিতে সরকারের আপত্তি।”

এই সমস্যা শুরু হয়েছে অগস্ট মাস থেকে। রাজ্যে আলুর দাম বৃদ্ধির জেরে আলু রপ্তানিতে রাশ টেনেছিল সরকার। ফলে সেবারও সীমান্ত আটকে রাজ্যে আলুর যোগানের চেষ্টা করা হয়েছিল সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বেঁকে বসায় সেবার সীমান্ত সমস্যা মিটলেও ফের আলুর দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। ফলে সরকারও সীমান্তে আলুর গাড়ি আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তার বিরোধীতা করেই মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আলু হিমঘর থেকে বের না করার সিদ্ধান্ত নিয়ছেন।

মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে হেমন্তেও ঝঞ্ঝা। তার জেরে বৃষ্টিপাতও হয়েছে শনিবার। ফলে আলু চাষও পিছিয়ে দিতে হয়েছে চাষীদের। এই সমস্যা নতুন নয়। ফি বছর নানান সমস্যার মধ্যে দিয়ে আলু চাষ করতে হয় ব্যবসায়ীদের। আবার সেটা বিক্রি করলেও মহাজনের কাছে দাম পান না চাষীরা। তারওপর সীমান্ত বন্ধের জেরে হিমঘরেই এবার নষ্ট হবে আলু। ফলে আগামী বছর থেকে রাজ্যে আলুর জোগান ও তার দাম যে চিন্তায় রাখবে বঙ্গবাসীকে তা অবশ্য বলাই যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights