সরকারি কর্মীকে পেটানোয় তমালের পুলিশ হেফাজত

Social Share

তিনি ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সফিউজ্জামান শেখ ওরফে হাবিব মাস্টারের ঘনিষ্ঠ কিন্তু এলাকার বিধায়ক সাহিনা মমতাজের বিরোধী বলেই পরিচিত।

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সরকারি কর্মীকে পিটিয়ে নওদায় ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করেছিল শাসক। আদালত অবশ্য পুলিশের হেফাজতে পাঠিয়ে দিল তাঁকে। নওদা পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ তমাল শেখের এখন ঠিকানা নওদা থানা। তিনি ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সফিউজ্জামান শেখ ওরফে হাবিব মাস্টারের ঘনিষ্ঠ কিন্তু এলাকার বিধায়ক সাহিনা মমতাজের বিরোধী বলেই পরিচিত। পুলিশ যদিও মূল অভিযুক্ত ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সইদুল ইসলামকে এখনও গ্রেফতার করেনি। অথচ ঘটনা তাঁকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে। যদিও পুলিশ সুপার সূর্য প্রতাপ যাদব, হাবিবকে ডেকে সতর্ক করেছেন শুক্রবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সইদুল ইসলাম ফোন করেছিলেন ওই পঞ্চায়েত সমিতির কোষাধ্যক্ষ তন্ময় দাসকে বৃহস্পতিবার সকালে। কিন্তু কাজে ব্যস্ত থাকায় সেই ফোন ওই সরকারি কর্মী ধরতে পারেননি। ব্যাস! তিনি শাসক। তিনি যেখানে শেষ কথা পঞ্চায়েতে, তাঁর কথায় যেখানে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায় সেই সভাপতির ফোন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক বা বিডিও যেখানে ফেরাতে পারেন না, একজন নিচুতলার কর্মী তা অনায়াসে এড়িয়ে যায় কোন সাহসে? যেমনি কথা গেল নিজের মনে অমনি কু কথায় পঞ্চমুখ সভাপতি কান ভরিয়ে দিলেন ক্যাশিয়ারের। তিনি যত বলেন তিনি একটি মিসড কল দেখেছেন, সভাপতি ততই বলেন তিনি পাঁচবার ফোন করেছেন। কোষাধ্যক্ষ না কি মিথ্যা কথা বলছেন।

ফোনের রেশ ধরে কার্যালয়ে এসে এবার ওই সরকারি কর্মীকে সবক শেখাতে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেন সভাপতি ঘনিষ্ঠ মানুষজন। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষদের সামনে তাঁকে বেধড়ক ঠেঙায় তাঁরা। প্রাণ বাঁচাতে সহায় হন বিডিও দেবাশিস সরকার। বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটে চল্লিশ নাগাদ নওদা পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়েই সেই ঘটনা ঘটে। তার রেশ চলে শুক্রবারেও। সহকর্মীর পাশে দাঁড়িয়ে কাজ বন্ধ রেখে একদিনের কর্মবিরতি পালন করেন ব্লক অফিসের কর্মীরা। শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছ’টা নাগাদ জেলাশাসকের নির্দেশে নওদা থানায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সইদুল শেখ ও বনও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তমাল শেখের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন বিডিও। সরকারি কর্মীকে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১২১(১) সহ সাতটি ধারায় মামলা দায়ের করে ওইদিন রাতেই তমালকে গ্রেফতার করে নওদা থানার পুলিশ। সভাপতি এখনও অধরা।

তমালকে চোদ্দ দিনের হেফাজতে চেয়ে বহরমপুর সিজেএম আদালতে ধৃতকে শনিবার তোলা হলে বিচারক তাঁদের বারোদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির জেলা সম্পাদক সঞ্জয় সাহা ঘটনার নিন্দা করে বলেন, ” থ্রেট কালচার সর্বত্র। তাও প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু আধিকারিকরা কতদিন শাসকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থাকবে ? খুবই নিন্দাজনক ঘটনা। এই সরকার যতদিন থাকবে ততদিন এইসব চলবেই।” পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন মুর্শিদাবাদের সভাপতি দেবাশিস সেনগুপ্ত বলেন, “ঘটনা নিয়ে আমাদের কাছে পুরো তথ্য নেই, ঘটনার প্রেক্ষিত কী তাও আমরা জানি না, কী ঘটেছে তাও আমরা জানি না। যেহেতু জানি না তাই মতামত দেওয়ার কিছু নেই।“

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights