
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ যত সময় গড়াচ্ছে ততই লম্বা হচ্ছে ট্যাব জালিয়াতির তালিকা। মুর্শিদাবাদের সালারের একটি স্কুলের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ১৫ জন পড়ুয়ার পর বহরমপুরের মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রায় সাড়ে ছ’শো পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে বলে ওই স্কুল সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও বাঁকুড়ার দশটি স্কুলেও পঞ্চাশ জনের বেশি টাকা গায়েব হয়েছে। কোথাও সেই টাকা উদ্ধার হয়েছে, কোথাও এখনও তা উদ্ধার হয়নি। জালিয়াতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উঠে আসছে উত্তর দিনাজপুরের চাপড়ার নাম। যদিও সমগ্র উত্তরবঙ্গ ছাড়াও গায়েব হওয়া ট্যাবের টাকা উদ্ধারের চেষ্টায় পুলিশ জাল ছড়িয়েছে বিহার, পঞ্জাবেও।
তারমধ্যেই শুক্রবার মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানার পুলিশ তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে। ডোমকলের একটি ব্যাঙ্কের সামনে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিল তারা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে হালিশহরের বাসিন্দা সাহুল ও মানিক সিং এবং বীজপুরের কবিরাজপাড়ার বাসিন্দা কামালউদ্দিন শেখ একটি গ্যাং এর সঙ্গে যুক্ত। একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চার রাউন্ড কার্তুজ, এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে ধৃতদের কাছ থেকে। এদের সঙ্গে ট্যাব জালিয়াতির কোনও যোগ আছে কি নেই তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ জানিয়েছেন, যে পড়ুয়ারা ট্যাবের টাকা পায়নি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই টাকা তাদের দিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য পুলিশ যে বিশেষ তদন্তকারি দল গঠন করা হয়েছে সেই দলের প্রতিও তিনি আস্থা দেখিয়েছেন।
তবে এই ঘটনা এবছরই যে প্রথম ঘটেছে তা নয়। গত বছরও একই ঘটনা ঘটেছিল। ‘তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প’র জালিয়াতি নিয়ে সেবার তেমন অবশ্য হইচই হয়নি। সেবারও নাম জড়িয়েছিল চাপড়ার। ঘটনাটি ঘটেছিল মুর্শিদাবাদের খাগড়া জিটিআই স্কুলে। যেভাবে স্কুল থেকে অন্য সবার নাম, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নাম্বার নথিবদ্ধ করে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয়ে পাঠান হয় সেইভাবেই পাঠান হয়েছিল তালিকা। কিন্তু একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির অন্য সব পড়ুয়ার টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে ঢুকলেও দুই পড়ুয়ার টাকা ব্যাঙ্ক থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছিল সে বছরও।
পরে ব্যাঙ্কে ও থানায় পদ্ধতি মেনে লিখিত আবেদন করে স্কুল কতৃপক্ষ। জানান হয়েছিল জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরকেও। সর্বস্তরের আবেদনের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে মুর্শিদাবাদের সাইবার থানা হদিশ পায় চাপড়ার একটি জালিয়াতি চক্রের। ওই স্কুলের শিক্ষক আবুল কাউসার বলেন, ” দেড়মাস পর সেই টাকা উত্তর দিনাজপুরের দুই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছিল। এবারও ওই টাকা উদ্ধার হবে বলেই আমার বিশ্বাস। তবে একটু সময় লাগবে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।”