
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এ যেন ঘুমের মধ্যে হঠাৎ জেগে ওঠা। এমনটাই ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের ক্ষেত্রে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার বসাতে সরকারের জমির প্রয়োজন ছিল। সেই জমি মালিকের কাছ থেকে বাজার চলতি দামে ২০২৩ সালে কিনেও নিয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ। কিন্তু বছর খানেক পরে ঘুম ভেঙে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখছেন, জমির মালিকের কাছ থেকে অতিরিক্ত জমি কেনা হয়ে গিয়েছে। আর যেমনি সে কথা মনে আসা, অমনি খস খস করে মালিককে দু-কলম চিঠি লিখে টাকা ফেরতের হুকুম জারি করেছেন মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। মাথায় হাত মালকিনের।
এমনই ঘটনা সামনে এসেছে সম্প্রতি। ঘটনাটি ঘটেছে লালগোলা সীমান্তে। সেখানকার এক অক্ষরজ্ঞানহীন মহিলা কামলা বিবি তাঁর দেড় বিঘা জমি সরকারকে বেচে দিয়েছিলেন গত বছর! দাম পেয়েছিলেন কুড়ি লক্ষাধিক টাকা। সেই জমির নতুন দলিলও তৈরি হয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধা সেই টাকা সম্পত্তি হিসেবে ছেলে মেয়েদের মধ্যে ভাগাভাগিও করে দিয়েছেন। এমন সময় জেলা প্রশাসন জমি মাপজোখ করে দেখছেন অতিরিক্ত জমি নেওয়া হয়ে গিয়েছে আজাদ আলীর স্ত্রীর কাছ থেকে। আর সেই ভুলের দায় তাঁরা চাপিয়ে দিচ্ছেন কামেলা বিবির ঘাড়ে। এমনটাই অভিযোগ।
প্রশাসনের সঙ্গে বাক যুদ্ধে না গিয়ে ওই মহিলা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অরিন্দম দাসের দ্বারস্থ হয়েছেন। অরিন্দম মক্কেলের পক্ষ নিয়ে পাল্টা মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। সাত দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনকে জবাবি চিঠি পাঠানোর কথা বলে চিঠিতে তিনি জানতে চেয়েছেন, একজন নিরক্ষর গ্রাম্য মহিলা একটা সরকারের প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে জমি বিক্রির দাবি কতটা বাস্তব? রাজ্য সরকার যে আইনে জমি কিনেছে, সেখানে জমি ফিরিয়ে নিয়ে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিন অরিন্দম বাবু বলেন, ” একটা সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা কতটা কাজ জানেন এবং কতটা সরকারের আইন সম্পর্কে জ্ঞান-গম্মি তাঁদের আছে, তা এই চিঠি থেকেই বোঝা যাচ্ছে। ভাবতেও খারাপ লাগছে একটা সরকার, একজন নিরক্ষর মহিলার ঘাড়ে দায় ঝাঁপিয়ে নিজেদের ত্রুটি ঢাকতে চাইছে।” জেলা প্রশাসনের জবাবি চিঠিতে সন্তুষ্ট না হলে কলকাতা হাইকোর্টে এই নিয়ে মামলা হবে বলেও প্রশাসনকে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) ও জেলাশাসককে এ বিষয়ে ফোন করলেও তারা ফোন ধরেননি।